ভারতের আন্দোলনে স্থবির বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, আটকা ভুটানের পাথরবাহী ট্রাক
নিজস্ব প্রতিবেদক: পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে কার্যক্রম আবারও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের ফুলবাড়ী বন্দরে শ্রমিক ও সিঅ্যান্ডএফ সদস্যদের আন্দোলনের কারণে ভুটান থেকে আমদানি করা বোল্ডার পাথরবাহী ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইয়ার্ড প্রায় ফাঁকা। ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন।
জানা যায়, ঈদের ১০ দিনের ছুটি শেষে রোববার (১৫ জুন) বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ওই দিন ভুটান থেকে ২০টি ট্রাকে বোল্ডার পাথর আমদানি হয় এবং বাংলাদেশ থেকে ১১টি ট্রাকে পাট রপ্তানি হয় নেপালে। তবে দ্বিতীয় দিনেই নতুন জটিলতা তৈরি হয়।
ভারতের ফুলবাড়ী বন্দরে ‘ফুলবাড়ী বর্ডার লোকাল ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’, ‘এক্সপোর্টার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন’সহ বিভিন্ন সংগঠন ভুটানের পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকতে না দেওয়ার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে। এর ফলে ভুটান থেকে কোনো পাথরবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি।
ভারতীয় আন্দোলনকারীদের দাবি, ভুটানের পণ্য আগে ভারতের ভেতরে ড্যাম্প করতে হবে এবং ভারতীয় ট্রাকে করে বাংলাদেশে আনতে হবে। এতে আমদানিকারকদের খরচ অনেক বেড়ে যাবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশি আমদানিকারক জাকির হোসেন বলেন, “আমরা যখন ভুটান থেকে পাথর আমদানি করি, তখন সব ট্যাক্স-শুল্ক মেনেই করি। ভারত এখন যে দাবি তুলেছে, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এতে খরচ ও পাথরের দাম উভয়ই বাড়বে।”
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সিবরাতুল্লা বিপু ও সুমন আল মামুন বলেন, “ভারত দুইদিন পরপর নতুন নতুন দাবিতে আন্দোলন করছে। কখনও স্লট বুকিং, কখনও পাথরের মান নিয়ে। আমরা ভারত থেকেও পাথর আনতে চাই, তবে তারা ভালো মানের পাথর না দিয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। তাই আমদানিকারকরা বাধ্য হয়ে ভুটানের দিকে ঝুঁকেছেন।”
শ্রমিক নেতা বদিউজ্জামান বাবুল বলেন, “বাংলাবান্ধা বন্দরে প্রায় হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ভারতের একের পর এক অযৌক্তিক আন্দোলনে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। দুই দেশের সরকারের উচিত দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা।”
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঈদের ছুটি শেষে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভারত থেকে পাথর আমদানি আগে থেকেই বন্ধ, এখন ভুটান থেকেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশা করছি।”
বিআলো/সবুজ