ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষ থামলো, যুদ্ধবিরতি কার্যকরী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে টানা ১২ দিন ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ইসরায়েল ও ইরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। যদিও এর বাস্তবায়নে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা ও বিভ্রান্তি।
ট্রাম্প এক সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় জানান, “ইরান ও ইসরায়েল একটি পূর্ণাঙ্গ ও চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি ধাপে ধাপে কার্যকর হবে। প্রথম ধাপে ইরান তাদের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করবে এবং ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবে। ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হলে এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যুদ্ধবিরতি হিসেবে বিবেচিত হবে।”
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও বিভিন্ন এলাকায় sporadic হামলার খবর পাওয়া গেছে। ইরানের রাজধানী তেহরান এবং তার আশপাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘মেহর’ জানায়, রাজধানীর বাইরেও আরও কয়েকটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, ইরানের রকেট হামলায় বেয়ারশেবা শহরে তিনজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওই হামলায় ধ্বংস হয় বেশ কিছু আবাসিক ভবন।
স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও ইরান প্রায় ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় ধরে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘এসএনএন’ জানায়, তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর করেছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ ও ওয়াইনেট নিউজও জানিয়েছে, ইসরায়েল ধাপে ধাপে তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করছে।
এই ১২ দিনের সংঘর্ষে ইরানে নিহত হয়েছে ৪০০-র বেশি মানুষ, আর ইসরায়েলে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৫৬ জন। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও সরকারি স্থাপনা। বাস্তুচ্যুত হয়ে লাখো মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে।
বিশ্ববাজারেও এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম কমে এসেছে এবং শেয়ারবাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা যতটা তাৎপর্যপূর্ণ, বাস্তবে তা কার্যকর করাটা ততটা সহজ নয়। হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যে দুই দেশের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস স্পষ্ট হয়েছে। এখন যুদ্ধবিরতির সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করছে উভয় পক্ষের আন্তরিকতা এবং আন্তর্জাতিক চাপের উপর।
বিআলো/সবুজ