মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে ইরান-ইসরাইল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কাতারের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছেন। ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার খবর দিয়েছে। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতির কথা জানিয়েছে ইসরাইল সরকারও।
আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কূটনীতিকের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, কাতারে আল–উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের আমিরের কাছে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করার অনুরোধ করেন।
ওই কূটনীতিক আরও জানান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান বিন জসিম আল-থানি সোমবার ইরানের সম্মতি আদায় করেন, যা পরবর্তীতে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বকে জানান।
সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, কাতার ইরানের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতা করে যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা করেছে। হোয়াইট হাউসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, ইসরাইল এই শর্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে যে ইরান তাদের দেশে হামলা বন্ধ করবে। ইরান এই শর্তে সম্মত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোয়াইট হাউসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, সোমবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপের যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ তোলেন।
আর তার প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা ইরানের সঙ্গে কথা বলেন বলেও ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওই কর্মকর্তা ব্যাখ্যা করেছেন, ইসরায়েল এই শর্তে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে রাজি হয়েছে যে ইরান নতুন আক্রমণ শুরু করবে না। তেহরান চুক্তিটি মেনে চলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বলে ওই একই সূত্র জানিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইরানি পক্ষের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যোগাযোগ হয়েছে এবং এতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের অংশগ্রহণ ছিল।
সূত্র বলছে, যখন সবকিছু একযোগে চলছিল, তখন জেডি ভ্যান্স এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী মিলে লজিস্টিকগুলো চূড়ান্ত করেন। এভাবেই ঘটনাটি ঘটে।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি এখন থেকে কার্যকর। ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এখন কার্যকর। দয়া করে এটি লঙ্ঘন করবেন না।’
এর আগে ট্রাম্প ইরান-ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির দাবি করেন। ইরাক ও কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর যুদ্ধবিরতির দাবি করেন তিনি। ট্রাম্প আরও বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে ধাপে ধাপে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া শুরু হবে। যেখানে ইরান একতরফাভাবে সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে। ১২ ঘণ্টা পরে ইসরাইল একই পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযানে ইসরাইল সব উদ্দেশ্য অর্জন করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরাইলি সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নেতানিয়াহু গত রাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং মোসাদের প্রধানসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে দেখা করে রিপোর্ট করেছেন যে, ইসরাইল অপারেশন রাইজিং লায়ন-এর সমস্ত উদ্দেশ্য এবং আরও অনেক কিছু অর্জন করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইল পারমাণবিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উভয় ক্ষেত্রেই ইরানের হুমকি দূর করতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর ইরানের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিআলো/শিলি