সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো সাগরের পাশে জেলা প্রশাসক
এইচ. আর. হীরা, বরিশাল: ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারানো মো. সাগরের পাশে দাঁড়িয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন। মানবিক সহানুভূতির জায়গা থেকে জেলা প্রশাসক সরকারি তহবিল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ মে বরিশাল নগরীর পশ্চিম বগুড়া জিয়া সড়ক এলাকার বাসিন্দা মো. সাগর (২৮) একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও ওষুধ ও পুনর্বাসনের খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার।
সাগরের মা মরিয়ম বেগম বলেন, “হাসপাতালে থাকার সময় কিছুটা সহায়তা পেয়েছি। কিন্তু এখন বাড়িতে ফিরেই বুঝতে পারছি প্রতিটি পদে খরচের চাপ। আমাদের পক্ষে এসব ব্যয় বহন করা খুবই কঠিন।”
মো. সাগরের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ‘বাংলাদেশের আলো’ পত্রিকার বরিশাল প্রতিনিধি এইচ. আর. হীরা। ওই প্রতিবেদন সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ পারভেজের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নজরে এলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাগরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, “সাগরের বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসক মহোদয় দ্রুত সাড়া দিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছেন। ভবিষ্যতেও এই ধরনের মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।”
এসময় ‘৮৪ ইভেন্ট গ্রুপ’-এর পক্ষ থেকে আরও একজনকে সেলাই মেশিন এবং তিনজনকে কফি বিক্রির সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সাগরের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। আমি চেষ্টা করেছি, আমার অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করতে। সমাজের প্রত্যেকেরই উচিত, এই ধরনের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার আগে মো. সাগর পিকআপ চালিয়ে সংসার চালাতেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। ফলে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে তার পরিবার—বিশেষ করে বৃদ্ধ পিতা-মাতা—চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
সাগরের পরিবার সমাজের সহানুভূতিশীল ও হৃদয়বান মানুষের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি চিকিৎসা, একটি কৃত্রিম পা এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ পাই, তাহলে সাগর হয়তো আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। সমাজের সম্মিলিত মানবিক সহায়তা একটি পা হারানো তরুণের জীবনে হয়ে উঠতে পারে নতুন আশার আলোকবর্তিকা।
বিআলো/এফএইচএস