রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল দুজনেই ছিলেন জীবনঘনিষ্ঠ কবি: শিক্ষা উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা সাহিত্যের দুই অগ্রদূত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামকে “জীবনঘনিষ্ঠ কবি” হিসেবে আখ্যা দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, “জীবনঘনিষ্ঠ বলেই তাঁরা মানুষের কল্যাণ ও মনুষ্যত্বের বিকাশের কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “দৈশিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল পাঠ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি ছিল রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত।

ড. আবরার বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আমাদের প্রতিটি জীবনের অন্তর্গত সুখ-দুঃখ, আনন্দ-ব্যথা, ভালোবাসা-সংগ্রামের সাহচর্যে ছিলেন বলেই তাঁরা প্রাসঙ্গিক। তাঁদের সাহিত্য-সংগীত আমাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়।”
তিনি বলেন, “মধ্যযুগের কবি বলেছিলেন-সবার উপরে মানুষ সত্য’। নজরুল বলেছেন—‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।’ রবীন্দ্রনাথ আহ্বান জানিয়েছেন-মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে’। এইসব উচ্চারণ আমাদের কাছে কেবল কবিতার পংক্তি নয়, এগুলো মানবিক চেতনার চিরন্তন মন্ত্র।
দৈশিক ও বৈশ্বিক সংকট প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, সহিংসতা, বৈষম্য ও মানবতা হরণের চিত্র ভয়াবহ। এ অবস্থায় নজরুলের রণহুংকার-‘আমি সেই দিন হব শান্ত, যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না’—আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়।
তিনি দার্শনিক উইল ড্যুরান্ট-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মানব ইতিহাস রক্তবাহী নদীর মতো নিষ্ঠুর হলেও তার তীরেই মানুষ কবিতায়, গানে, ভাস্কর্যে জীবনের জয়গাথা রচনা করে। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আমাদের সেই জীবনের জয়গান গাইবার সাহস ও প্রেরণা দিয়েছেন।
আলোচনার শেষে ড. আবরার বলেন, এই দুই কবির সাহিত্য পাঠ আমাদের জন্য আবশ্যিক, কারণ তাদের মধ্যে নিহিত মানবিক আবেদন আজকের দিনে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: ড. মোরশেদ শফিউল হাসান – প্রাবন্ধিক ও গবেষক, অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম – মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি, জনাব কুদরত-এ-হুদা – পরিচালক, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সভাপতিত্ব করেন ড. মো. ওমর ফারুক, রেক্টর (সচিব), বিসিএস প্রশাসন একাডেমি।
বিআলো/এফএইচএস