আফগানিস্তানের হামলার হুমকিতে পাকিস্তান উদ্বিগ্ন, জাতিসংঘে কড়া বার্তা
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় জাতিসংঘে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে পাকিস্তান।
দেশটি বলেছে,আফগানিস্তানের অশাসিত অঞ্চল থেকে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি), বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং মজিদ ব্রিগেডের মতো গোষ্ঠী পাকিস্তানের কৌশলগত অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে হামলার ছক আঁকছে।
সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন, ‘আফগানিস্তান যেন সন্ত্রাসীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এই হুমকি শুধু পাকিস্তানের নয়, গোটা অঞ্চলের এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও বিপজ্জনক’।
সাম্প্রতিক হামলায় নতুন করে উদ্বেগ
গত কয়েক সপ্তাহে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে। গত ২৮ জুন উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় ১৬ সেনা নিহত হয়। কয়েকদিন পর বাজাউরে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে একজন সহকারী কমিশনারসহ পাঁচজন কর্মকর্তা নিহত হন। এই হামলাগুলোতে আফগানিস্তান থেকে আগত সন্ত্রাসীরা ফেলে যাওয়া অত্যাধুনিক বিদেশি অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে পাকিস্তান অভিযোগ করেছে।
রাষ্ট্রদূত জানান,আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত টিটিপি প্রায় ৬ হাজার যোদ্ধা নিয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি হিসেবে কাজ করছে। এ ছাড়া আইএস-খোরাসান, আল-কায়েদা এবং বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোও সেখানে সক্রিয় রয়েছে।
কাবুল-ইসলামাবাদ সচিব পর্যায়ের বৈঠক
এদিকে সোমবার আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের কাবুল সফরের সময় হওয়া চুক্তির ভিত্তিতে এই বৈঠক আয়োজিত হয়।
পাকিস্তানের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব (আফগানিস্তান ও পশ্চিম এশিয়া) রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আলী আসাদ গিলানি এবং আফগান পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুফতি নূর আহমদ নূর বৈঠকে নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি, বাণিজ্যিক ট্রানজিট, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। দুই দেশই জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ আঞ্চলিক শান্তির বড় হুমকি এবং এই হুমকি মোকাবিলা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। পাকিস্তান আফগান মাটিতে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য আফগান ট্রানজিট সহজীকরণ, ১০ শতাংশ ফি বাতিল, বীমা গ্যারান্টি প্রদান, পরীক্ষা ও স্ক্যানিং কমানো এবং ট্র্যাক অ্যান্ড ট্রেস সিস্টেম কার্যকর করার মতো পদক্ষেপ পর্যালোচনা করা হয়েছে।
বিআলো/শিলি