টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল, নিখোঁজ বহু :উদ্ধার কাজ অব্যাহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে চরম বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ২৭ জন কিশোরী এবং গ্রীষ্মকালীন শিবিরের (সামার ক্যাম্প) পরামর্শদাতা ছিলেন, যারা স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে একটি ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে শুরু হওয়া এই “শতবর্ষের দুর্যোগে” নদীর পানি মাত্র ৪৫ মিনিটে ২৬ ফুট (প্রায় ৮ মিটার) বেড়ে দুই তলা ভবনের সমান উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
ক্যার কাউন্টি, যেখান দিয়ে গুয়াদালুপে নদী বয়ে গেছে, সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে। এখানেই নিহত হয়েছেন ৮৪ জন, যাদের মধ্যে ২৮ জন শিশু।
‘ক্যাম্প মিস্টিক’ নামে খ্রিস্টান ধর্মভিত্তিক একটি অল-গার্লস সামার ক্যাম্পে প্রায় ৭৫০ জন অবস্থান করছিলেন বন্যার সময়। শিশুরা ঘুমিয়ে থাকার সময় প্রবল স্রোতে নদীর পানি কেবিনের ছাদ পর্যন্ত উঠে যায়। শিশুর কম্বল, খেলনা, এমনকি জানালাও পানির চাপে ভেঙে যায়। একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, “আমরা দুইজন নিখোঁজ শিশুর পরিবারকে সাহায্য করছি। শেষ মেসেজে তারা লিখেছিল, আমরা ভেসে যাচ্ছি’, তারপর ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এমন একটি অঞ্চল, যাকে বলা হয় “ফ্ল্যাশ ফ্লাড অ্যালি”, সেখানে পর্যাপ্ত সতর্কবার্তা ব্যবস্থা নেই স্যান অ্যান্টোনিওর বাসিন্দা নিকোল উইলসন, যিনি তার মেয়েদের ক্যাম্পে পাঠানোর কথা ভাবছিলেন, একটি চেঞ্জ.অর্গ পিটিশন শুরু করেছেন, যাতে গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট আধুনিক সতর্কতা ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দেন। তার ভাষায়, মাত্র পাঁচ মিনিটের সাইরেন বাজানো গেলেই হয়তো প্রতিটি শিশুকে বাঁচানো যেত।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী শুক্রবার টেক্সাস সফরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, তার প্রশাসনের আবহাওয়া সংস্থায় বরাদ্দ কমানো সতর্কতা ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছে। তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট এসব অভিযোগকে “বিকৃত ও নির্দয় মিথ্যাচার” বলে মন্তব্য করেছেন। উদ্ধারকাজে ১,৭৫০ জন কর্মী, হেলিকপ্টার, নৌকা এবং খোঁজার কুকুর কাজ করছে। মাটি পানিতে পরিপূর্ণ হওয়ায় নতুন বৃষ্টিপাত আরও প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি করেছে, যা উদ্ধার কাজে বাধা দিচ্ছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের চরম আবহাওয়া, বিশেষ করে বন্যা, খরা ও দাবদাহের তীব্রতা ও ঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিআলো/এফএইচএস