বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেডের বিরুদ্ধে ভ্যাট ও ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগ, দুদকে আবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকির অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুদক চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া মূসক চালান দেখিয়ে এবং প্রকৃত লেনদেন গোপন রেখে সরকারকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে। কোম্পানির চেয়ারম্যান হাসান আহাম্মেদ ও পরিচালক আসওয়াদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও উত্থাপন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেডের কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ৭০ মেট্রিক টন বিস্কুট ও ক্যান্ডি উৎপাদন হয়। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে দুটি মাঝারি ও দুটি বৃহৎ অটোমেটিক বিস্কুট লাইন, একটি ক্যান্ডি লাইন এবং একটি বেকারি লাইন।
কর্মী সংখ্যা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানে বাস্তবে ২,২৫০ জন কর্মী থাকলেও পাবলিক একাউন্টে দেখানো হয় মাত্র ৭৫০ জন। এতে শ্রম আইন ও কর ফাঁকির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রতিমাসে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট ও ট্যাক্স কর্মকর্তাদের ‘সম্মানী ভাতা’ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে নজরদারি এড়িয়ে যায়। এছাড়া ভুয়া চালানপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত ১২-১৩টি ট্রাকে পণ্য পরিবহন করে দেশের বিভিন্ন বিক্রয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
বর্তমানে কোম্পানিটির রয়েছে মোট ২৬টি বিক্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র থেকে প্রতিমাসে গড়ে ২৯-৩০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়। তবে এর বিপরীতে মাসিক প্রায় দেড় কোটি টাকার ভ্যাট গোপন রাখা হয় বলে অভিযোগে দাবি করা হয়।
এছাড়াও, পার্টি পেমেন্টের ওপর আরোপিত অ্যাডভান্স ট্যাক্স এবং বাৎসরিক আয়কর ফাঁকির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সরকার ও শেয়ারহোল্ডারদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে শুল্ক ও ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন অভিযোগকারীরা। তাঁরা মনে করেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকির প্রকৃত চিত্র উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
বিআলো/এফএইচএস