দেশে প্রথম রোবটিক রিহ্যাব সেন্টারের যাত্রা শুরু, পক্ষাঘাতগ্রস্তদের জন্য নতুন আশার দ্বার
নিজস্ব প্রতিবেদক: পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুজনিত রোগীদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশে শুরু হতে যাচ্ছে এক নতুন অধ্যায়। রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থাপিত দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে।
চীনের কারিগরি সহায়তায় গড়ে তোলা এই সেন্টারটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটিতে চীন সরকার প্রায় ২০ কোটি টাকার রোবটিক যন্ত্রপাতি অনুদান দিয়েছে। সেন্টারটিতে মোট ৬২টি রোবট রয়েছে, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক। এই রোবটগুলোর সাহায্যে রোগীর অবস্থার ওপর ভিত্তি করে অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট ও কার্যকরভাবে ফিজিওথেরাপি ও স্নায়ুবিক পুনর্বাসন সেবা প্রদান করা যাবে।
বিএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্টার চালুর আগে চীনের ৭ সদস্যবিশিষ্ট বায়োমেডিকেল বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্বে ২৭ জন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাইলট প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন শেষে সেন্টারটি ধাপে ধাপে সাধারণ রোগীদের জন্যও উন্মুক্ত করা হবে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, চলমান কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়ে যারা এখনও পক্ষাঘাত বা স্নায়ুজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য বিনামূল্যে রোবটিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে স্বল্প খরচে সাধারণ রোগীরাও এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
রোবটিক সেন্টারটি বিশেষ করে নিম্নোক্ত রোগীদের পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: স্ট্রোকজনিত পক্ষাঘাত, স্নায়ুবিক বৈকল্য, দুর্ঘটনাজনিত অঙ্গ বিকলতা, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা বা নার্ভ ইনজুরি,ফ্রোজেন শোল্ডার ও অন্যান্য জটিল পুনর্বাসন প্রয়োজনীয় রোগ।
এই সেন্টার শুধু একটি প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়ন নয়, বরং দেশের পুনর্বাসন চিকিৎসা খাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে দক্ষ জনবলের সমন্বয়ে এটি বাংলাদেশের লাখো রোগীর জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালাবে।
বিআলো/এফএইচএস