প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে যাত্রাবাড়ীতে গণহত্যা: বিবিসির অডিও ফাঁস
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিবিসির অনুসন্ধানে প্রকাশিত অডিও রেকর্ড বলছে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতা গণআন্দোলন দমন করতে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে সরাসরি অনুমোদন দিয়েছিলেন।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকায় যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট, পুলিশের নির্বিচারে গুলিতে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হয়েছেন, যা ছবিতে উঠে এসেছে। বিবিসির অভিযান এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্ধমতম পুলিশি সহিংসতা বলে অভিহিত করেছে।
অডিও কর্ত্যকাণ্ড: ১৮ জুলাই গণভবনে বাসভবন থেকে কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওতে শেখ হাসিনা দাবি করেন, তারা যেখানেই পারবে, গুলি করবে। নিহত আন্দোলনকারী মিরাজ হোসেনের স্মার্টফোনে ধারণ হওয়া ভিডিওতে, পুলিশ গুলি ছোড়ে-ভিডিও মেটাডেটায় দেখা গেছে গুলির শুরু দুপুর ২:৪৩ এবং অব্যাহত ছিল ৩০-৩৫ মিনিট ধরে। বিকাল ৩:১৭ পর্যন্ত অভিযানের চিত্র পাওয়া যায়। এতে নিরুত্তাপ গুলিকাণ্ডের পাশাপাশি আহত-মৃতদেহ রাস্তা জুড়ে পড়ে থাকার দৃশ্য স্পষ্ট।
বাংলাদেশ পুলিশ স্বীকার করেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বিক্ষিপ্তভাবে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ হয়েছিল। যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশের বিরুদ্ধে বহু মামলা দায়ের হয়েছে; দায়ের হওয়া এক মামলায় আছেন সেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে ও অভিযুক্তদের বিচারের মাধ্যমে “ন্যায়বিচার নিশ্চিত” করা হবে।
ফরেনসিক পদ্ধতিতে “ইয়ারশট” নামের একটি অলাভজনক সংস্থা নিশ্চিত করেছে রেকর্ডে কোনো কৃত্রিম ইন্টারফেরেন্স বা কাটা আছে না, এবং এটি প্রকৃতভাবে শেখ হাসিনার কণ্ঠ। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ’র ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টও কণ্ঠ-স্বরের মিল শনাক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, রেকর্ডিংগুলো স্পষ্ট প্রমাণ যে শেখ হাসিনা সরাসরি গুলি চালানোর অনুমতি দিয়েছিলেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল-এ তথ্য উঠে এসেছে একটি ফাঁস হওয়া অডিও ও ভিডিও ফুটেজ-সহ বিবিসির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত ভিডিও ও মেটাডেটার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন, পুলিশি পক্ষ দাবি করছে -৬ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও বিচারের ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বিআলো/এফএইচএস