মাদ্রাসা শিক্ষার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে: ড. খালিদ হোসেন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা একটি বিশেষায়িত ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা ব্যবস্থা, যেটি যুগ যুগ ধরে উপমহাদেশে ইসলামি জ্ঞানচর্চা, মূল্যবোধের বিকাশ এবং চিন্তাধারার প্রসারে অনন্য ভূমিকা রেখেছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকতার ছুতোয় ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না।
আজ বুধবার ঢাকার আইডিইবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “টেকসই উন্নয়নে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ধারা: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মাদ্রাসা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ এই সেমিনারের আয়োজন করে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় ৮৬ বছর আলিয়া ধারার আলেম-ওলামারাই উপমহাদেশে ইসলামী জ্ঞানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজও এই ধারার শিক্ষার্থীরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে মাদ্রাসা শিক্ষাকে পরিকল্পিতভাবে অবদমিত করা হয়েছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ বিষয়ের অনার্স কোর্স অনুমোদন দিলেও ইসলামি স্টাডিজ, আরবি সাহিত্য বা ইসলামের ইতিহাসের বিষয়ে বরাবর নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। তবে এই সীমাবদ্ধতা এখন কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে।
ড. খালিদ বলেন, আমাদের হীনমন্যতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কেউ যদি মাদ্রাসা শিক্ষার টুটি চেপে ধরতে চায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষা ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবহেলা সমাজকে আরও দুর্বল করে তুলবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। হতাশ না হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদেরকে আশাবাদী মনোভাব নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন।
প্রধান আলোচক ছিলেন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আলম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ আলী, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন অধ্যাপক মো. অলিউল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম
সেমিনারে দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক ইসলামি পণ্ডিত, আলেম-ওলামা ও শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
বিআলো/এফএইচএস