পাসের হারে তলানিতে বরিশাল বোর্ড
বাস্তব মূল্যায়নে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ
গত বছরের তুলনায় অর্ধেক শিক্ষার্থী পেয়েছে জিপিএ-৫
এইচ আর হীরা, বরিশাল ব্যুরো: ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম পাসের হার বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা হয়। এ বছর বরিশাল বোর্ডে পাসের হার মাত্র ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যা গত বছরের ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে প্রায় ৩৩ শতাংশ পয়েন্ট। বোর্ড পর্যায়ে এটি সবচেয়ে বড় ধরনের পতন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে কনফারেন্স হলে ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর জি. এম. শহীদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে জানা গেছে, এ বছর বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১১৪ জন। অথচ ২০২৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ১৪৫, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম।

এদিকে, বরিশাল বোর্ডের অধীন ছয় জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ পাসের হার পিরোজপুর জেলায় ৬৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে বরিশাল জেলা, যেখানে পাসের হার ৫৭ দশমিক ২০ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এরপর রয়েছে, পটুয়াখালী জেলার পাশের হার ৫৫ দশমিক ৭২, যা গত বছর ছিল ৮৩ দশমিক ৮০।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা ভোলা জেলার পাশের হার ৫৪ দশমিক ৭০, যা গত বছর ছিল ৮৯ দশমিক ২৭। পঞ্চম অবস্থানে থাকা ঝালকাঠি জেলার পাশের হার ৫১ দশমিক ৭৭, যা গত বছর ছিল ৯০ দশমিক ৫২ এবং ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা বরগুনা জেলার পাশের হার ৫০ দশমিক ৮৪ যা গত বছর ছিল ৮৩ দশমিক ৮০।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি পাসের হার রাজশাহী বোর্ডে ৭৭.৬৩ শতাংশ। এরপর রয়েছে যশোর বোর্ডে ৭৩.৬৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭২.০৭ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৬৮.৫৭ শতাংশ, ঢাকা বোর্ডে ৬৭.৫১ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৬৭.০৩ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৬৩.৬০ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫৮.২২ শতাংশ। সবচেয়ে কম পাসের হার বরিশাল বোর্ডে ৫৬.৩৮ শতাংশ।
২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষার্থী, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ কম। এবারের ফল প্রস্তুত করা হয়েছে ‘বাস্তব মূল্যায়ন’ নীতির ভিত্তিতে। বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, এই নীতির কারণে নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সতর্কতা ও কঠোরতা অবলম্বন করা হয়েছে।
শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তব মূল্যায়ন শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান উন্নয়নে ইতিবাচক হলেও এর ফলাফল বিপর্যয়কর হয়েছে এমন বোর্ডে বিশেষ মনিটরিং জরুরি। তারা মনে করেন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, প্রশ্নের মান ও পাঠদানের পদ্ধতিতে পরিবর্তন না আনলে শুধু মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তন ফলপ্রসূ হবে না।
বিআলো/তুরাগ