দেশে নতুন করে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হচ্ছে: ঝালকাঠিতে নাহিদ ইসলাম
ঝালকাঠিতে পদযাত্রা কর্মসূচি
মনিরুজ্জামান মনির, ঝালকাঠি:জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “আওয়ামী লীগের মাফিয়াতন্ত্র, চাঁদাবাজি, গুম-খুনের রাজনীতি বন্ধ করতেই আমরা মাঠে নেমেছি। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে, গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে ঝালকাঠি শহরের কাপড়িয়া পট্টি এলাকার একটি ভবনের সামনে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির পথসভায় তিনি এ বক্তব্য দেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা যেন আবার সেই পুরোনো দখলদার, গুম-খুনের রাজনীতিতে ফিরে না যাই। বর্তমানে রাজনীতিতে একটি নতুন ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে, যা জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী। আমরা এই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই।”
তিনি আরও বলেন, “ঝালকাঠির সন্তানরাও জুলাইয়ের সেই উত্তাল দিনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। তারা জানত এই লড়াই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, জীবনের ও ভবিষ্যতের জন্য। যারা মনে করে স্বৈরাচার পতন হঠাৎ হয়েছে, তারা ভুল জানে—শত শত মানুষ শহীদ হয়েছেন, হাজার হাজার আহত হয়েছেন। এই মুক্তি জীবন ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে।”
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছেড়েছে ঠিকই, কিন্তু শোষণমূলক সিস্টেম অক্ষত আছে। আমরা শুধু সরকার বদল নয়, পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চাই। এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে শিক্ষা হবে সবার অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা হবে সুলভ ও মানসম্পন্ন। মানবিক উন্নয়ন ও সামাজিক মর্যাদা থাকবে প্রতিটি মানুষের জীবনে। আমরা চাই দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি চিরতরে বন্ধ হোক।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আজও প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হচ্ছে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই না। যদি প্রয়োজন হয় আমরা বারবার রাস্তায় নামবো। জুলাই আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা চুপ করে থাকবো না।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আজকের লড়াই শুধুই রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য নয়—এটা সাধারণ মানুষের মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।”
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা মিতু ও যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান প্রমুখ।
এর আগে পিরোজপুরের কর্মসূচি শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাজাপুরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি নেন। পরে নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদরাসা পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠাতা কায়েদ সাহেব হুজুরের কবর জিয়ারত করেন এবং ঝালকাঠি শহরে পদযাত্রা ও পথসভায় অংশ নেন।
বিআলো/তুরাগ