বরিশালে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে প্রাথমিক স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা!
সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় ক্লাসরুম, দখলে খেলার মাঠ, শিক্ষার পরিবেশে চরম দুর্ভোগ
এইচ আর হীরা, বরিশাল ব্যুরো: বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাক স্মৃতি কলোনির ১৩৪/১ নং চন্দ্রদীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার বদলে লড়াই করছে বৃষ্টির পানির সঙ্গে। সামান্য বৃষ্টিতেই শ্রেণিকক্ষে জমে এক ফুট পানি। জরাজীর্ণ ভবনের কারণে একটিমাত্র কক্ষে গাদাগাদি করে পড়তে হচ্ছে দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীকে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলি মজুমদার বলেন, বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যায় ক্লাসরুম। শিক্ষকদের কক্ষও বাদ যায় না। বাধ্য হয়ে একটি কক্ষেই সব শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছি। এভাবে আর কতদিন!

স্কুলটির তিনটি শ্রেণিকক্ষের মধ্যে দুইটিতেই বর্ষাকালে পানি ওঠে। নির্মিত হয় ১৯৮৪ সালে। কিন্তু চার দশকে কোনো সংস্কারের মুখ দেখেনি। বৃষ্টির পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। নতুন নির্মিত পাশের একটি ভবন থেকে পানি এসে ঢুকে পড়ে স্কুলের ভেতর। বাথরুমের দূষিত পানি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে মিশে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
খেলার মাঠও রেহাই পায়নি। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী দখলে নিয়েছে বিদ্যালয়ের মাঠ। বর্তমানে সেখানে রাখা হয় বিভিন্ন গাড়ি ও মালামাল। শিক্ষকদের অভিযোগ, শিশুদের খেলাধুলার জন্য নির্ধারিত জায়গা হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খাদিজা আক্তার বলেন, স্কুলের এমন করুণ অবস্থায় প্রতিদিনই উদ্বেগ নিয়ে থাকতে হয়। অথচ কষ্ট করে পড়তে আসা শিশুদের জন্য কিছুই করতে পারছি না।
অভিভাবক ফিরোজ জানান, স্কুলের মাঠ নিজেদের উদ্যোগে একবার দখলমুক্ত করেছিলাম। পরে আবার দখল হয়ে গেছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় আজ এই দশা।
অভিভাবকদের অনেকেই স্কুলের এই বেহাল দশা দেখে সন্তানদের অন্য স্কুলে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ গোলাম মোস্তফা সরোয়ার হোসেন বলেন, আপনাদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। সোমবার পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের দাবি, দ্রুত বিদ্যালয়ের সংস্কার, জলাবদ্ধতা নিরসন, খেলার মাঠ উদ্ধার ও শিশুদের নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতে কার্যকর উদ্যোগ নিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বিআলো/তুরাগ