সাংবাদিকতার নতুন ঘাঁটি: কদমতলীতে কেন গড়ে উঠল সাংবাদিক ক্লাব?
কদমতলীর কলমযোদ্ধাদের নতুন ঠিকানা; বিভেদের ফাঁদ না ঐক্যের মঞ্চ?—সাংবাদিক মহলের প্রশ্ন
কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব: নতুন নেতৃত্বে যাত্রা শুরু
বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
ইবনে ফরহাদ তুরাগ: বিগত ১৬ বছর আওয়ামী সৈরাচার সরকারের আমলে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা যখন প্রতিনিয়ত হয়রানি, পেশাগত অনিরাপত্তা আর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছিলো—তখন এই এলাকায় বসবাসরত পেশাদার সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ ছিলেন চুপচাপ, নিরন্তর, কাজ করে যাচ্ছিলেন বহু বছর। তাদের জন্য ছিল না কোনো সংগঠিত প্ল্যাটফর্ম, ছিল না একে অপরের পাশে দাঁড়াবার সুযোগ। ঠিক তখনই ২০২৪ সালের জুন মাসে একটি দুঃসাহসী উদ্যোগ নেয়া হয়, যে উদ্যোগে রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় গড়ে উঠেছিলো একটি ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ, যার নাম ‘কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব’।
কেন এই ক্লাব? কেন এই সময়েই গঠিত হলো? কারা আছেন নেতৃত্বে? আর এই সংগঠনের উদ্দেশ্য কী? দৈনিক বাংলাদেশের আলোর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চমকপ্রদ সব তথ্য:
প্রথমত, ঢাকার দক্ষিণ সিটি এলাকার ওয়ারী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা কদমতলী। এই এলাকার সাংবাদিকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল একটি শক্তিশালী, সংগঠিত ও দায়িত্বশীল প্ল্যাটফর্ম—যেখানে তারা পেশাগত সুরক্ষা, সম্মান ও সহমর্মিতা পাবেন। অবশেষে সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছিলো ‘কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব’ নামক সংগঠনের আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে।
দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চলে কর্মরত অনেক সাংবাদিক স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক বলয় এবং অসাধু গোষ্ঠীর চাপের মুখে কাজ করে যাচ্ছিলেন। কোনো রিপোর্ট প্রকাশের পর হুমকি, সামাজিক বয়কট, এমনকি আইনি হয়রানিও তাঁদের সহ্য করতে হচ্ছিল। তখনই পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে পারস্পরিক ঐক্য ও আস্থার যায়গা নিষ্চিত করতে গঠন হয় এই সাংবাদিক সংগঠন। ক্লাবের স্লোগান রাখা হয়—” সময়ের প্রয়োজনে সমাজকে পরিবর্তনে আমরা অঙ্গিকারবদ্ধ”।
তৃতীয়ত, ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘কদমতলী থানা প্রেসক্লাব’ নামক একটি সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও নীতিনির্ধারকদের যোগসাজশে একই নামে এলাকায় চারটি পৃথক প্রেসক্লাব গঠিত হয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন ২০২৩ সালে সে সময় ক্লাবটির সভাপতি হিসেবে দাবি করে ঈদ শুভেচ্ছা দেন ৩ জন সাংবাদিক নেতা। এতে সৃষ্টি হয় গ্রুপিং, এবং গ্রুপিং রক্ষা করতে সংগঠনটি গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত না হয়ে, মানহীন সাংবাদিকদের নিয়ে একাধিকবার মনগড়া কমিটি গঠন করে। এসব কমিটির কিছু অপেশাদার সাংবাদিকমহল সে-সুবাধে প্রেসক্লাবের নাম ব্যবহার করে সামাজিক সুবিধা আদায়, অর্থ আদায় ও নানা অসাধু কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ ওঠে। এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে ২০২৪ সালের শুরুতে সংগঠনটি থেকে এক-তৃতীয়াংশ সাংবাদিক সরে আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব’-এর। এটি কেবল একটি নতুন সংগঠনের সূচনা ছিল না—এটি ছিল একটি প্রতিবাদ, একটি প্রতিরোধ, একটি সংগঠিত জবাব।
ক্লাবের আত্মপ্রকাশ সাহসের, সংগঠন মর্যাদার
২০২৪ সালের ৬ জুন, রাতে যখন শহরের আলো নিভে আসছে, তখন রায়েরবাগের সাজেদা ভিলায় কয়েকজন সাংবাদিক জড়ো হন। মিডিয়ার স্বাধীনতার প্রশ্নে বারবার নতজানু হতে থাকা অবস্থায় তাঁরা বলেন, “আর নয়। এবার আমরা এক হব।” সেখানেই আত্মপ্রকাশ ঘটে কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের। সংগঠনের জন্ম হয় নিছক আনুষ্ঠানিকতায় নয়—বরং অপশক্তির বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার আত্মরক্ষার তাগিদেই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন একঝাঁক মূলধারার গণমাধ্যমকর্মী, যারা তখন ক্ষমতাসীন সরকারের চাপে সংবাদ পরিবেশনায় প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছিলেন।
নেতৃত্বের সূচনা: নির্ভরতার প্রথম ধাপ
তবে নামমাত্র আহ্বায়ক কমিটি নয়, বরং সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয় প্রতিষ্ঠাকালীন নেতৃত্ব।
প্রথম দিনের আলোচনায় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন ‘নতুন সময়’-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাঞ্চন চৌধুরী সুমন এবং সাধারণ সম্পাদক হন ‘আমার সংগ্রাম’-এর সিনিয়র সাব-এডিটর ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। তবে এটি ছিল অস্থায়ী কমিটি। এক বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত তখনই নেওয়া হয়।
প্রথম বছর (২০২৪-২০২৫) সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সদস্য সংগ্রহ, সংবাদিকদের মধ্যে আস্থা তৈরি এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে সংগঠনের ভিত্তি মজবুত করতে থাকে ক্লাবটি। যা হয়ে উঠে পেশাগত স্বাধীনতার এক নতুন ভিত্তিপ্রস্তর, যা সাংবাদিকদের জন্য একটি সুরক্ষিত সামাজিক ও সাংগঠনিক ছায়া দেওয়ার সংকল্পে এগিয়ে যেতে থাকে।
কিন্তু ২০২৫ সালের নির্বাচনের পূর্বেই হয়ে উঠে নতুন চক্রান্ত ও গ্রুপিং। এ সময় ক্লাব থেকে পদত্যাগ করেন কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সেগ্রেটারী মাহমুদুল হাসান ও ক্লাবের ২য় মেয়াদী ৩ বিশিষ্ট কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম. এইচ রনি।
এক বছরের ব্যবধানে দুই কমিটি: কেবল নেতৃত্বের পালাবদল, নাকি অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন?
তবে এবার কাকতালীয়ভাবে নয়, বরং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যেই মাত্র এক বছরের মাথায় গঠিত হয় নতুন কমিটি—আবারো সুমন চৌধুরীকে সামনে রেখেই, এবার সঙ্গী হলেন সোলাইমান ও রনি মজুমদার। এতে অনেকেই বলছেন, এটি একটি কৌশলগত ধারাবাহিকতা—কেউ কেউ আবার বলছেন, পুরোনো নেতৃত্বের বাইরে রেখে নতুন বলয়কে প্রতিষ্ঠিত করার স্মার্ট চাল।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম, অপ-সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সংগঠন: ফল উৎসবেই যা শিদ্ধান্ত হয়
কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের এক বছর পেরিয়ে যখন দেখা যায়, সমাজে সাংবাদিকদের বিভিন্ন গ্রুপিং, অপ-সাংবাদিকতা, ভূইফোড় সংগঠন ও সাংবাদিকদের নামে-বেনামে আধিপত্য বিস্তার আরও বাড়ছে, গ্রেপ্তার আতঙ্ক আর মিথ্যা মামলার জালে সংবাদকর্মীরা যখন জর্জরিত—ঠিক তখনই মূল ধারা সাংবাদিকদের যোগসাজেসে ক্লাবের নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হতে থাকে আলোচনা ।
২০২৫ সালের জুনে বার্ষিক ফল উৎসব-এর মাধ্যমেই শুরু হয় নতুন কমিটি গঠনের আনুষ্ঠানিকতা। সেই ফল উৎসবে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া ছিল স্পষ্ট: তারা চান নেতৃত্ব, কিন্তু এমন নেতৃত্ব—যে কথা বলবে, রাস্তায় নামবে, পাশে দাঁড়াবে। সেদিন উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই তুহিন এবং বিএনপি ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা জাকির মাঝি। এটিকে কেউ কেউ সাংবাদিকদের একধরনের রাজনৈতিক সেতুবন্ধন চেষ্টাও বলে উল্লেখ করেছেন।
সুমন-সোলায়মান-রনির নেতৃত্বে নতুন কমিটি
১৮ জুলাই রায়েরবাগে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় ২৩ সদস্যের নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা আসে। সভাপতি নির্বাচিত হন সুমন চৌধুরী (নতুন সময়), সাধারণ সম্পাদক হন মোঃ সোলায়মান (মানবকণ্ঠ) এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হন রনি মজুমদার (ভোরের পাতা)। জানা যায়, এই কমিটি শুধু নেতৃত্ব নয়, প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।
ক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি সুমন চৌধুরী সাফ জানিয়ে দেন, “এই সংগঠন হবে শুধু চায়ের আড্ডার জায়গা নয়, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের প্রতিরক্ষাবর্ম।”
নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান বলেন, “সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেবল সংবিধানের পাতায় থাকবে না—আমরা তা বাস্তবে ফিরিয়ে আনব। “সবাইকে নিয়ে একটি সক্রিয় ও স্বচ্ছ নেতৃত্ব দিতে আমরা প্রস্তুত।”
সাংগঠনিক সম্পাদক রনি মজুমদার স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা থাকবো মাঠে, সাইড লাইনে নয়— থাকবো মানুষের পাশে, সাংবাদিকের পাশে -এই মূলমন্ত্র নিয়ে কাজ করব। আমরা এগিয়ে যাবো, ভয়কে প্রতিহত করে গণমানুষের অধিকার রক্ষায় দৃঢ় থাকব।”
যুগ্ন সম্পাদক ইবনে ফরহাদ তুরাগ বলেন, “সাংবাদিকতা একটি সেবামূলক পেশা; সেহেতু সাংবাদিক সংগঠনও একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান—কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়স্থল নয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো সমাজে সুবিচার প্রতিষ্ঠা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, অপসাংবাদিকতা রোধ, সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়ন এবং জনমত তুলে ধরে সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা।
নেতৃবিন্দ জানান, আমরা বিশ্বাস করি, গঠনতন্ত্রবিরোধী মতানৈক্য ও দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ, সুশৃঙ্খল ও দায়িত্বশীল সংগঠন গড়ে তোলাই এখন সময়ের দাবি।
নতুন কমিটির নেতৃবিন্দ আরও জানিয়েছে—তারা পেশাগত প্রশিক্ষণ, মানবিক সহায়তা, সাংবাদিক নির্যাতনবিরোধী আইনি উদ্যোগ, এবং প্রযুক্তিনির্ভর সাংবাদিকতা উন্নয়নে কাজ করবেন। সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নয়ন, অধিকার সুরক্ষা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তবে এসব প্রতিশ্রুতি শুধু মুখে না থেকে বাস্তবে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
📌 কারা আছেন নেতৃত্বে?
নতুন কমিটিতে সুমন-সোলাইমান-রনি নেতৃত্বে!
সুমন চৌধুরী: নতুন সময়ের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত।
মো. সোলাইমান: মানবকণ্ঠের পেশাদার রিপোর্টার। নেপথ্যে থেকেও বহুদিন সাংবাদিক সমাজে সক্রিয়।
রনি মজুমদার: ভোরের পাতা পত্রিকার প্রতিনিধিত্ব করা এই মুখটি ক্লাবের কমিটিতে নতুন হলেও সাংবাদিকতায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকাণ্ডে বরাবরই ছিলেন দৃশ্যমান।
তাদের নেতৃত্বে গঠিত নতুন কমিটিতে রয়েছে আরও ২০ জন সদস্য। এই কাঠামো দেখেই বোঝা যায়—শুধু কাগজে-কলমে নয়, বাস্তব কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকার প্রতিশ্রুতি নিয়েই পথচলা শুরু হয়েছে।
নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা:
সভাপতি: সুমন চৌধুরী (নতুন সময়)
সিনিয়র সহ-সভাপতি: হাসান কবির জনি (বিজনেস জার্নাল)
সহ-সভাপতি: রুবেল গাজী (CIN টিভি)
সাধারণ সম্পাদক: মো. সোলায়মান (মানবকণ্ঠ)
সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: আশরাফ উদ্দিন (আজকের টাইমস)
যুগ্ম সম্পাদক: ইবনে ফরহাদ তুরাগ (বাংলাদেশের আলো)
সাংগঠনিক সম্পাদক: রনি মজুমদার (ভোরের পাতা)
সহ সাংগঠনিক সম্পাদক: নুরুন্নবী শরীফ অর্নব (আলোর জগত)
সহ সাংগঠনিক সম্পাদক: মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (CNN বাংলা টিভি)
দপ্তর সম্পাদক: রাকিব হোসেন মিলন (আজকের টাইমস)
সাহিত্য, প্রকাশনা ও অর্থ সম্পাদক: বাবলু শেখ (স্বাধীন সংবাদ)
আইন সম্পাদক: অ্যাড. ওয়াহিদুন্নবী বিপ্লব (সকালের সময়)
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক: নাসির উদ্দীন মোল্লা (ডেইলি প্রেজেন্ট টাইমস)
সংস্কৃতি সম্পাদক: এম.এ.এইচ. মাসুদ (বার্তা বিচিত্রা)
সমাজকল্যাণ সম্পাদক: শাহজালাল ফারুক (সময়ের কাগজ)
সহ-দপ্তর ও আইসিটি সম্পাদক: নয়ন সমাদ্দর রুদ্র (দুর্নীতি সমাচার)
প্রচার সম্পাদক: লিটন গাজী (সাহারা টিভি)
পাঠাগার সম্পাদক: এস ইসলাম জয় (আমাদের সময় ডটকম)
ক্রীড়া সম্পাদক: দীপু ভুঁইয়া (আওয়ার বাংলাদেশ)
কার্যনির্বাহী সদস্য:
জেসমিন জুঁই (ডেইলি ট্রাইবুনাল)
মিজানুর রহমান সুমন (আমাদের কণ্ঠ)
ফারদিন আহমেদ ইমন (নয়াদিগন্ত)
মোঃ আক্তারুজ্জামান (দৈনিক নিরপেক্ষ)
📍 কারা নেই, এবং কেন?
এই প্রশ্নটি সাংবাদিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান ও সদ্য নির্বাচিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট ঘোষিত কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক এম এইচ রনির নাম থাকলেও নেই নতুন ২৩ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে। তাদের অনুপস্থিতি নিয়ে কেউ সরাসরি মুখ খুলছেন না, তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, ক্লাবের শৃঙ্খলা পরিপন্থী পারস্পরিক অভিযোগ, অভ্যন্তরীণ লেনদেন ও নীতিগত মতবিরোধই হয়তো এ ব্যবধানের কারণ।
সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর না হয়ে যেন বিভেদের মাধ্যম না হয়
মূল ধারার সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যেখানে মতভেদ থাকবেই, তবে দলবাজি কিংবা গ্রুপিং যেন ক্লাবের মূল উদ্দেশ্যকে ম্লান না করে—এমনই মত ক্লাব সংশ্লিষ্ট একাধিক সদস্যের। তারা বলেন, সাংবাদিকদের সংগঠন হওয়া উচিত একতাবদ্ধতার প্রতীক, বিশেষ কোনো রাজনৈতিক পক্ষের প্রভাবমুক্ত। ক্লাব সভাপতি নিজেই বলেছেন, “এই সংগঠন হবে ঢাকা-৪ ও ঢাকা -৫ অঞ্চলের সাংবাদিকদের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।” তবে অতীতের বহু সংগঠনের মতো এখানেও যদি ব্যক্তি প্রাধান্য, বিভাজন বা নেতৃত্বের চরম খণ্ডীকরণ ঘটে, তাহলে এই সম্ভাবনাময় ক্লাব হারিয়ে যেতে পারে ইতিহাসের পাতায়।
মানবাধিকার সংগঠনের একজন উপদেষ্টা বলেন, একটি প্রশ্ন আজ খুব প্রাসঙ্গিক—সাংবাদিকদের যখন গলা টিপে ধরা হয়, তখন তারা কোথায় যাবে? কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব সেই জবাব খুঁজে পেয়েছে—নিজেদের মধ্যে। একতা, নেতৃত্ব, এবং অগ্রগতির মাধ্যমে তারা গড়তে চায় এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সাংবাদিকরা একা থাকবেন না, নিরুপায় হবেন না।

কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব—এটি এখন শুধু একটি সংগঠন নয়, বরং সাংবাদিকতার নতুন এক ঘাঁটি হয়ে উঠার সম্ভাবনা নিয়ে পথচলা শুরু করেছে। প্রশ্ন এখন একটাই—এই ক্লাব কি সত্যিই পেশাদার সাংবাদিকদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে, নাকি ঢাকামুখী রাজনৈতিক প্রভাবে আরেকটি নামমাত্র সংগঠনে পরিণত হবে?
🚩এবারের কমিটি পেশাদারদের শক্তিশালী মঞ্চ
এবারের কদমতলি থানা সাংবাদিক ক্লাবের নতুন কমিটিতে আছেন জাতীয় দৈনিক, অনলাইন ও টেলিভিশনের অভিজ্ঞ এবং তরুণ সাংবাদিকরা। কমিটির সদস্যরা শুধু পদ-পদবির মানুষ নন—তারা সক্রিয় রিপোর্টার, রিপোর্ট করার অপরাধেই যারা অনেক সময় চিহ্নিত হন ‘অবাঞ্ছিত’ হিসেবে। এই কমিটি শুধু পেশাগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ কিংবা সহায়তা নয়—তারা গড়ে তুলতে চায় এমন একটি কাঠামো, যেখানে সাংবাদিক নির্যাতনের খবর আর চুপ করে হজম করতে হবে না বরং প্রতিবাদের ভাষায় মুখর হবে শহর।
উল্লেখ্য, ‘কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব’ এখন আর কেবল একটি নাম নয়; এটি কদমতলীর সংবাদকর্মীদের সাহসী উচ্চারণের প্রতীক। প্রতিটি মাইক্রোফোন, প্রতিটি ক্যামেরা, প্রতিটি কলমের পেছনে এখন একটি সম্মিলিত শক্তির হাত আছে। এই সংগঠন যদি তার মূল লক্ষ্য ও নীতির প্রতি অটল থাকে—তবে একদিন এটি শুধু থানা নয়, গোটা দক্ষিণ ঢাকা অঞ্চলের সাংবাদিকদের ন্যায়ের ছায়া হয়ে উঠতে পারবে। এই সংগঠন এখন কেবল সংগঠন নয়—এটি সাংবাদিকতার লড়াইয়ের নতুন ঠিকানা।
🔎 তথ্যসূত্র: স্থানীয় সাংবাদিক, ক্লাবের বিবৃতি, পূর্ব ও বর্তমান কমিটির নথি, দলীয় সম্পর্কিত ঘটনার প্রেক্ষাপট।
বিআলো/নিউজ







 
                            
                         
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                
 
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                            
