আনন্দ নিমিষেই বিষাদে: পাইলট তৌকিরের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রথমবার একা প্রশিক্ষণ বিমান চালানোর আনন্দে ভাসছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের পরিবার। এই মাহেন্দ্রক্ষণ ঘিরে ছিল পরিবারজুড়ে উচ্ছ্বাস। সবাই জানতেন, আজই আকাশে একা ওড়ার কথা মেধাবী তৌকিরের। কিন্তু সোমবার দুপুরে হঠাৎই ছড়িয়ে পড়ে এক হৃদয়বিদারক খবর—তৌকিরের বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
মুহূর্তেই আনন্দ ছাপিয়ে যায় গভীর শোকে। তখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি তৌকির বেঁচে আছেন কি না। বুকভরা আশায় রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তার বাবা-মা, বোন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
রাজশাহীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের আশ্রয় ভবনের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, বোন সৃষ্টি ও বোনজামাই। সেখানেই বড় হয়েছেন তৌকির।
খবর পাওয়ার পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে র্যাবের একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে পৌঁছানো হয়। কিন্তু তখনও তাদের জানানো হয়নি যে তৌকির আর জীবিত নেই।
তৌকিরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এলাকায়। রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে তিনি ভর্তি হন পাবনা ক্যাডেট কলেজে। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। এক বছর আগে তিনি বিয়ে করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে। তার বাবা তহুরুল ইসলাম পেশায় একজন আমদানি-রপ্তানিকারক।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সোমবার দুপুরে ঢাকার উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তৌকিরকে। পরে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় দেশের বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিআলো/তুরাগ