• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    চাল ভেঙে ঘরের মধ্যে পড়েন পাইলট তৌকির: শিক্ষক নাসিরউদ্দিন 

     dailybangla 
    23rd Jul 2025 12:02 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজও শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে। কেউ কাঁদছেন প্রিয় সহপাঠীর জন্য আবার কেউ প্রিয় সহকর্মী হারানোর কষ্টে আছেন। শিক্ষকরাও নীরব-নিস্তব্ধ। আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সামনে ভিড় করছেন অসংখ্যক মানুষ।

    স্কুলটির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন জানান, সোমবার (২১ জুলাই) দুর্ঘটনার সময় নিজে প্রাণে বেঁচে গেছেন। চোখের সামনে দাউ দাউ আগুনে পুড়তে দেখেছেন স্নেহের শিক্ষার্থীদের।

    সেই বিভীষিকাময় পরিস্থিতির কথা বিবিসি বাংলার কাছে তুলে ধরেন নাসির উদ্দিন।

    তিনি বলেন, ‘একটা প্রচণ্ড সাউন্ড হয়। শব্দের সঙ্গে সঙ্গে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এসে দেখি একটা অংশ পুরো ভেঙে গেছে। তারপরই সবাই বলে আগুন আগুন। যেখানে বিমানটা পড়েছে ওখানটায় গিয়ে দেখি মাত্র আগুন ধরছে। তারপর পরই সময় যত বেড়েছে আগুনের পরিমাণ বেড়েই চলছিল।’

    তিনি জানান, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা।

    নাসিরউদ্দিন বলছিলেন, ‘বারবার আমরা পানি দিচ্ছিলাম, কিন্তু আগুন কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আসছিল না। কিছুক্ষণ পরে আমার হাতের বামে দেখি অনেকগুলো স্টুডেন্ট আমার নাম ধরে ডাকছে, বলছে – স্যার আমাদের বাঁচান’।

    ‘পরে আমিসহ কয়েকজন গ্রিল ভেঙে ১২/১৩ জনকে উদ্ধার করি। প্রায় আধাঘণ্টা পর আমি আমার ডিপার্টমেন্টে আসি। আমার ডিপার্টমেন্টে আসি যখন, তখন আমার পিয়ন বলে স্যার ডিপার্টমেন্ট পুরোটা ভেঙে গেছে’, বলছিলেন তিনি।

    স্কুলটির শারীরিক শিক্ষা বিভাগেই নাসিরউদ্দিনের অফিস। বিধ্বস্ত ভবনে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী উদ্ধার অভিযান শুরু করার নিজ বিভাগে ফিরে আসেন তিনি।

    ‘তারপর ভেতরে ঢুকে দেখি আমার ডেস্ক পুরোটা দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে গেছে। ওপরে দেখতে পাই প্যারাসুট। তখন গুঞ্জন আসলো প্যারাসুট থাকলে মানুষ আসতে পারে’, বলছিলেন নাসিরউদ্দিন।

    তিনি বলছিলেন, ‘বিমান বাহিনীর লোকরা সার্চ করে দেখে আমার ঘরের এক কোনায় পড়েছিল পাইলট। টিনের চাল ভেঙে আমার ঘরেই মধ্যে পড়েছিল পাইলট। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে পাইলটকে।’

    এদিকে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগমুহূর্তেও কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। কন্ট্রোল রুমকে তিনি বলেছিলেন, ‘বিমান ভাসছে না..মনে হচ্ছে নিচে পড়ছে।’

    রাজধানীর কুর্মিটোলা পুরাতন বিমানঘাঁটি থেকে সোমবার (২০ জুলাই) বেলা সোয়া ১টার দিকে এফ-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে একক উড্ডয়ন (সলো ফ্লাইট) করেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম। এটি ছিল তার প্রথম সলো ফ্লাইট, যা বৈমানিক প্রশিক্ষণের সর্বশেষ ও সবচেয়ে জটিল ধাপ। এ পর্যায়ে পাইলটকে কোনো সহকারী, নেভিগেটর বা প্রশিক্ষক ছাড়াই একা বিমান পরিচালনা করতে হয়।

    একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি উত্তরা, দিয়াবাড়ি, বাড্ডা, হাতিরঝিল ও রামপুরার আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এর মধ্যে হঠাৎই বিমানটির আচরণ অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তখন পাইলট কন্ট্রোল রুমে জানান, ‘বিমান ভাসছে না…মনে হচ্ছে নিচে পড়ছে।’

    গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা ৩২ জনের মৃত্যু ও ১৬৪ জন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে।

    আইএসপিআর জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবাহিনীর ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল চত্বরের একটি দোতলা ভবনের ওপর গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম সাগর যুদ্ধবিমানটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়।

    বিআলো/শিলি

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031