নরম খাবারেই বদলে গেছে আমাদের চেহারা?
অনলাইন ডেক্স:আজকাল সোজা দাঁতের জন্য ব্রেস, রাবার ব্যান্ড এমনকি জ-সার্জারির আশ্রয় নেন অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো-অতীতে কি এতো বেশি দাঁতের অমিল ছিল? গবেষণায় উঠে এসেছে, মানব ইতিহাসের অনেকটা সময়জুড়ে এমনটা ছিল না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক যুগে দাঁতের অস্বাভাবিকতা বা ম্যালঅক্লুশন (যেমন ভিড় করা বা বাকা দাঁত) বেড়েছে। এর সম্ভাব্য একটি কারণ: খাবারের ধরন। প্রাচীন শিকারি-সংগ্রাহকদের শক্ত, আঁশযুক্ত খাবার—যেমন মাংস, বাদাম, গুঁড়ি শাকসবজি-চিবানোর জন্য শক্ত চোয়াল ছিল। কিন্তু প্রায় ১২ হাজার বছর আগে কৃষি শুরু হওয়ার পর মানুষের খাদ্য তালিকায় যুক্ত হয় নরম, প্রক্রিয়াজাত শস্য ও ফলমূল। এতে চোয়ালে চাপ কমে যায় এবং ধীরে ধীরে চোয়াল ছোট হয়ে যায়।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যু হেরিং বলেন, আগে মানুষ পরিবেশ থেকে সরাসরি খাবার সংগ্রহ করত—যা ছিল অপেক্ষাকৃত কঠিন ও খসখসে। আর এখন আমরা খাই আইসক্রিম আর সফট ব্রেড।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইরা লেয়ার্ড জানান, শক্তিশালী চোয়ালের দরকার না হলে তা গঠনের জন্য অতিরিক্ত হাড় তৈরি করা ব্যয়বহুল। তাই প্রজন্মের পর প্রজন্মে চোয়াল ছোট হতে হতে আজকের গড় আকৃতিতে এসেছে।
তবে কিছু গবেষক বলছেন, বিষয়টি শুধু দীর্ঘমেয়াদি বিবর্তনের ফল নয়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত কয়েক শতকে মানুষের চোয়ালের পরিবর্তন অনেক বেশি দ্রুত হয়েছে-যা শুধুমাত্র জেনেটিক বিবর্তনে সম্ভব নয়। পরিবর্তে, তারা জীবনযাপন, শরীরের ভঙ্গি ও খাদ্যাভ্যাসকে দায়ী করেছেন।
হাড়ের গঠন চোয়ালের পেশি ব্যবহারের ওপরও নির্ভর করে। যেমন, কোনো প্রাণী যদি তরল খাবারে অভ্যস্ত হয়, তার মুখের হাড়েও পরিবর্তন দেখা যায়।
সুতরাং, আধুনিক খাদ্যাভ্যাস কেবল আমাদের স্বাদেই পরিবর্তন আনেনি, তা আমাদের চেহারাকেও বদলে দিয়েছে।
বিআলো/এফএইচএস