রাশিয়ায় ভূমিকম্প-সুনামির পর শুরু হলো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির পর রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় ও উচ্চতম আগ্নেয়গিরি ‘ক্ল্যুচেভস্কয়’ এখন ভয়ংকরভাবে লাভা উদগীরণ করছে।
রুশ বিজ্ঞানীদের মতে, আগ্নেয়গিরির ঢাল বেয়ে প্রবল গতি ও উত্তাপ নিয়ে নেমে আসছে জ্বলন্ত লাভার স্রোত।
বুধবার প্রশান্ত মহাসাগরে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরপরই এই অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। খবর দ্য ইনডিপেনডেন্টের।
রুশ বিজ্ঞান একাডেমির ইউনাইটেড জিওফিজিক্যাল সার্ভিস টেলিগ্রামে জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরিটির পশ্চিম ঢাল দিয়ে জ্বলন্ত লাভা নেমে আসছে। আর আগ্নেয়গিরির ঠিক ওপরেই তীব্র আলোর ঝলক ও বিস্ফোরণ দেখা গেছে।
ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগ্নেয়গিরিটি পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাতস্কি শহর থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। আর ক্ল্যুচি নামের একটি ছোট শহরের কাছাকাছি হওয়ায় এটির নাম রাখা হয়েছে ক্ল্যুচেভস্কয়।
এটি ইউরেশিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এর উচ্চতা প্রায় চার হাজার ৮৩৫ মিটার (১৫ হাজার ৮৩৩ ফুট)। আগ্নেয়গিরিটি প্রায় সাত হাজার বছর আগে গঠিত হয়েছিল এবং এটি এখনো নিয়মিত অগ্ন্যুৎপাত করে। এটির অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ নামে পরিচিত ভূকম্পনপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে।
ইতিহাস বলছে, ২০১৩ ও ২০২০ সালে এই আগ্নেয়গিরির শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাত বিশ্ব মিডিয়ায় স্থান পেয়েছিল। অগ্ন্যুৎপাতের সময় এটি আকাশে কয়েক কিলোমিটার উঁচু ছাইয়ের স্তম্ভ নিক্ষেপ করে, যা বিমান চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
ক্ল্যুচেভস্কয় আগ্নেয়গিরি গঠিত হয়েছে বহু বছর ধরে জমে থাকা লাভা, ছাই ও অন্যান্য আগ্নেয় উপাদান দিয়ে। এটি রুশ ভূতত্ত্ববিদ ও অভিযাত্রীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণার বিষয় হয়ে আছে। তবে এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হওয়ায় এর চারপাশে জনবসতি সীমিত। রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা আগ্নেয়গিরিটির গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করেন, যেন অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস আগে থেকেই দেওয়া যায়।
আজকের ভূমিকম্পে কামচাটকা অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কিছু মানুষ আহত হয়। তবে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পের পর এই অঞ্চলে প্রায় ৩ থেকে ৪ মিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাশিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিমান চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতে পর্যবেক্ষণ জোরদার করা হয়েছে।
বিআলো/শিলি