অবিলম্বে মুক্তি ও আইনি নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি মানবাধিকার সংগঠকদের
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রখ্যাত মানবাধিকারকর্মী, কনস্ট্রাকশন কোম্পানির পরিচালক এবং সমাজসেবক নাজরাতান নাঈম আহমেদ রাতুলকে জোরপূর্বক একটি বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে আটকে রাখার অভিযোগে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সম্মিলিত জোট।
রবিবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)-এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার সম্মিলিত জোটের মুখপাত্র মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখে নাজরাতান নাঈমকে তার পরিবারের সদস্যরা জোরপূর্বক ‘বীকন পয়েন্ট’ মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ অমানবিক ও বেআইনি।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিকন পয়েন্ট’ একটি সুস্থ ব্যক্তিকে মাদকাসক্ত প্রমাণ করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাকে আটকে রেখে ভয়াবহ নিপীড়ন চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, নাজরাতান নাঈম আশঙ্কা করেছিলেন যে, তার পরিবার তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ ঘোষণা করে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করছে। গত ২৪ জুলাই মানবাধিকারকর্মীদের এক সভায় এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নাঈমের স্ত্রী রহস্যজনকভাবে গুলশানের শান্তা টাওয়ারের ৯ম তলা থেকে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার নবজাতকসহ তিনটি সন্তান ছিল। ঘটনাটি তদন্ত ছাড়াই দ্রুত দাফন করা হয়, যা নিয়েও নতুন করে তদন্তের দাবি তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মানবাধিকার সংগঠক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, একজন সুস্থ নাগরিককে অবৈধভাবে আটকে রাখা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সরকারকে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে রাতুলকে মুক্ত করে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরাচার আমলে যেভাবে মানবাধিকার হরণ করা হতো, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সে অবস্থা থেকে অনেকটাই উন্নত। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা তা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভুক্তভোগী নাঈমের পরিবারের লোভী সদস্যদের ষড়যন্ত্র তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার সম্মিলিত জোটের চেয়ারম্যান কবি ও সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল মজুমদার, মানবাধিকার নেতা আমজাদ হোসেন খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ভিকটিম নাজরাতান নাঈম আহমেদের পাশে থেকে সকল ধরনের আইন সহায়তা ও মানবাধিকার রক্ষায় কাজ চালিয়ে যাবে।
বিআলো/এফএইচএস