গর্ভধারিণী মাকে মারধর : থানায় অভিযোগ দায়ের
রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরে গর্ভধারিণী মাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্বয়ং ছেলের বিরুদ্ধে। গত ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার রংপুর মহানগর হনুমান তলার স্থায়ী বাসিন্দা ডা. শাহিদ হোসেন সৌরভ দিনাজপুর থেকে রংপুরে তার নিজ বাসায় আসেন। শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে তার মাকে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই চড়থাপ্পড় দেন। শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন।
এক পর্যায়ে তার মাকে উদ্ধারের জন্য ছোট ভাই শোয়েব হোসেন শাকিল এগিয়ে এলে তাকেও কিল ঘুষি দেয়া শুরু করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় শোয়েব হোসেন শাকিল ৯৯৯ এ কল করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় সহযোগিতা চান। তথ্য প্রদান পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার একটি টিম গিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এ সময় পুলিশকে শাহিদ হোসেন হুংকার দেন। বলেন, আমি সরকারী ডাক্তার আপনারা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কে? এরপর পুলিশ উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। কোতোয়ালি থানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা. শাহিদ হোসেন সৌরভ ১ আগস্ট একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অপর দিকে শোয়েব হোসেন শাকিল ওইদিন রাতে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার বড় ভাই ডা. শাহিদ হোসেন সৌরভ বদমেজাজী ও উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির মানুষ। ডা. শাহিদ হোসেন সৌরভ তার পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় তার পিতাকে সামান্য বিষয় নিয়ে মারধর করতেও কুণ্ঠাবোধ করতো না। আমার পিতার মৃত্যুর ৫ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও শাহিদ হোসেন সৌরভের আচার আচরণের কোনোরূপ পরিবর্তন হয়নি। বরং তিনি সামান্য বিষয় নিয়ে আমার মা-সহ আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ মারধর করে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডাক্তার শাহিদ হোসেন সৌরভের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন না বলে জানান। কোতায়ালী থানার ওসি মো. আতাউর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, উভয়পক্ষের অভিযোগপত্র আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করবার নির্দেশ দিয়েছি।
জানা যায়, ডা. শাহিদ হোসেন সৌরভ বর্তমানে চাকরি করছেন দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিভাগে সহকারী অধ্যাপক (চলতি দায়িত্ব) পদে। উনি ২৫তম বিসিএসে চাকরি পেয়েছেন। পর পর দুইবার মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেও উত্তীর্ণ হতে পারেন নি। এরপর বাবা-মাকে মারধর করে জোর করে টাকা নিয়ে ভর্তি হন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে।
২৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হবার পরও তথ্য লুকিয়ে পুলিশ ও প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পাবার আশায় এরপরও তিনি অংশ নেন বিসিএসের ভাইভা পর্যন্ত। কিন্তু সেই ক্যাডার আর পাননি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিয়ে করেন ৩০ বিসিএসের সমবায় কর্মকর্তাকে। কিন্তু তার মানসিক সমস্যা ও উগ্র মেজাজের কারণে সেই স্ত্রী বিয়ের ২ মাসের মাথায় তাকে ডিভোর্স দেন।
ডিভোর্সের পর থেকে তার মানসিক সমস্যা আরো বাড়তে থাকে। বাড়িতে এসে বাবা মাকে মারধর। ছোট ভাইয়ের জিনিসপত্র ভাঙচুর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন চালাতো।
বিআলো/ইমরান