কালিহাতীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০, ইসলামী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত
নূর নবী (রবিন), টাঙ্গাইল উত্তর: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বিএনপির বিজয় মিছিলকে ঘিরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি, হামলা ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। এ সময় পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকা কিছুক্ষণ উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, একই দিনে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো শান্তিপূর্ণভাবে গণঅভ্যুত্থান দিবসের কর্মসূচি পালন করে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোর নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল কালিহাতী আর এস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়। অপরদিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকার শহীদ শফি সিদ্দিকী তোরণের পাশে অপরপক্ষের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবে সমাবেশ করছিলেন। এই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন, সাবেক উপজেলা আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ তালুকদার, ড্যাব নেতা ডা. শাহ আলম, মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম, সাবেক মেয়র আলী আকবর জব্বার ও জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল।
মিছিলটি সমাবেশের কাছাকাছি পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, এরপরই শুরু হয় হামলা-ধাওয়া। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন বলে দুই পক্ষই দাবি করেছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির এক পক্ষের নেতা শুকুর মাহমুদ তালুকদার অভিযোগ করেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলাম। হঠাৎ করে বেনজির আহমেদের নেতৃত্বে একটি মিছিল এসে আমাদের কর্মীদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালায়।” অন্যদিকে বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মজনু মিয়া পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিলাম। বাসস্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছালে অপরপক্ষ আওয়ামী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।”
ঘটনার বিষয়ে কালিহাতী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির উভয় পক্ষের কর্মসূচি ছিল পাশাপাশি। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়, যা কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে। পরে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বর্তমানে শান্তিপূর্ণ রয়েছে।”
এদিকে একই দিনে সকাল ৮টায় জামায়াতে ইসলামী কালিহাতী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গণমিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্থানীয় কার্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ দুটি কর্মসূচি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সম্পন্ন হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বিআলো/তুরাগ