• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানি : সবচেয়ে অগ্রগামী বাংলাদেশ 

     dailybangla 
    08th Aug 2025 5:27 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    তৈরি পোশাক খাত আমাদের রপ্তানি আয়ের মূল ভিত্তি:মহিউদ্দিন রুবেল,সাবেক পরিচালক বিজিএমইএ

    রতন বালো: চীনের পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও একটি বড় পার্থক্য হলো বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৬.২০ শতাংশই তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। অপরদিকে চীনের মোট রপ্তানিতে পোশাকের অবদান মাত্র ৪.৩০ শতাংশ, যা তাদের বহুমাত্রিক রপ্তানি কাঠামোর প্রতিফলন। তবে শুধু আয় নয়, বরং দেশের সামগ্রিক রপ্তানি নির্ভরতায় পোশাক খাতের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করলে আরো গভীর বাস্তবতা সামনে আসে।
    বিশ্বে তৈরি পোশাকের বাজারে চীন শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও রপ্তানি নির্ভরতার দিক থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে অগ্রগামী। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৩৮.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা বিশ্বের মোট বাজারের ৬.৯০ শতাংশ। বিশ্ববাজারে এ খাতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়, চীনের পরে এবং ভিয়েতনামের আগে।

    এদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের (বিএই) সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্ব পোশাক বাজারের মোট মূল্য ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৫৫৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে এককভাবে চীন ১৬৫.২৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে ২৯.৬৪ শতাংশ বাজার দখলে রেখেছে। তবে চীন ক্রমশ এ খাত থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্যান্য খাতে গুরুত্ব দিচ্ছে, যার ফলে নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য।
    বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের (বিএই) সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ব পোশাক বাজারের মোট মূল্য ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৫৫৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে এককভাবে চীন ১৬৫.২৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে ২৯.৬৪ শতাংশ বাজার দখলে রেখেছে। তবে চীন ক্রমশ এ খাত থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্যান্য খাতে গুরুত্ব দিচ্ছে, যার ফলে নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য।
    বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও করণীয়:
    বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীন যখন ধীরে ধীরে পোশাক খাত থেকে সরে এসে প্রযুক্তি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদাভিত্তিক শিল্পে গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন বাংলাদেশ এই শূন্যস্থান পূরণে এক অনন্য সম্ভাবনার মুখোমুখি। বিশ্বের অনেক বড় ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে বাংলাদেশমুখী হচ্ছে। কারণ একদিকে শ্রমের ব্যয় তুলনামূলক কম, অপরদিকে দক্ষ জনশক্তি ও উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়েছে।
    তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবৃদ্ধিকে টেকসই করতে হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে পরিবেশবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে হবে। একই সঙ্গে বৈচিত্র্য আনা জরুরি। যেমন-উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদন, নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি, ডিজাইন ও ফ্যাশন ইনোভেশনে বিনিয়োগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের অর্থনীতি বহুমুখী হওয়ায় পোশাক রপ্তানি তাদের মোট রপ্তানির একটি ক্ষুদ্র অংশ হলেও, তারা এখনও এ খাতকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরাসরি ভর্তুকি ও প্রণোদনার মাধ্যমে সহায়তা করে যাচ্ছে। ফলে বিশ্ববাজারে তাদের অবস্থান স্থিতিশীল রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এ পরিস্থিতি একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে তৈরি করেছে অপার সম্ভাবনা। বিশেষ করে চীনের বাজার থেকে কিছু ব্যবসা ধীরে ধীরে অন্যত্র সরে যাওয়ায় বাংলাদেশ সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। তবে এজন্য প্রয়োজন টেকসই শিল্পনীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষ মানবসম্পদ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া তুলনামূলক পোশাক রপ্তানিতে কম নির্ভরশীল। তারা প্রযুক্তি, যানবাহন, যন্ত্রপাতি ও সার্ভিস খাতসহ আরো অনেক খাতে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে এই দেশগুলো পোশাক খাতের পাশাপাশি বিকল্প খাতেও ব্যাপক আয় করছে।বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই বিকল্প খাতের বৈচিত্র্য এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি। ফলে অর্থনীতির ভারসাম্য অনেকাংশেই নির্ভর করছে পোশাক শিল্পের ওপর। এ খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে এখনই সময় উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের।

    বাংলাদেশ তুলনামূলক চীনের চেয়ে ভালো অবস্থানে:
    যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের ‘পাল্টা শুল্কনীতি’ চালু করায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশির ভাগ দেশ তাদের রফতানি বাণিজ্যে শুল্ক চাপে পড়েছে। তবে এ পরিস্থিতিতেও যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক বাজারে কিছু দেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ তুলনামূলক চীনের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ‘পাল্টা শুল্ক নীতিতে ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও ভিয়েতনাম শুল্কহার ও বাজার প্রবেশের দিক থেকে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশ রয়েছে মধ্যম স্তরে। বিপরীতে চীন সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির আওতায় চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এদিকে ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শুল্কহার ৩৪ শতাংশ, যা এশীয় প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে দেশটি এখন মার্কিন বাজারে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। ভারতের ওপর মোট শুল্কহার দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৫ থেকে ৪০ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে। হোম টেক্সটাইল, কটন গার্মেন্টস এবং হস্তশিল্প রপ্তানিতে ভারতের অবস্থান এখনও দৃঢ়। অনেক মার্কিন ব্র্যান্ড সরাসরি ভারত থেকে আমদানি করায় দেশটির বাজার অংশীদারত্ব বড় ধাক্কা খায়নি।

    ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তিনির্ভর ও উচ্চমানের পোশাক রফতানিতে ইতোমধ্যে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের চীনা পণ্যের ওপর কড়াকড়ির ফলে ভিয়েতনাম আরো উপকৃত হচ্ছে। দেশটির মোট শুল্কহার ৩৩ দশমিক ৫ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারিত হলেও উৎপাদন দক্ষতা ও বহুজাতিক ব্র্যান্ডের আস্থা দেশটিকে সুবিধাজনক রেখেছে।বাংলাদেশের ওপর মোট শুল্কহার এখন দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৫ থেকে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ। গড়পড়তা শুল্ক বাড়লেও চীনের তুলনায় এটি এখনও প্রতিযোগিতামূলক। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা পোশাকের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কছাড় পাওয়ার সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের জন্য তা কিছুটা স্বস্তির বার্তা বহন করছে। তবু নতুন শুল্ক কাঠামোতে রপ্তানিকারকদের কৌশলগত পরিকল্পনা ও বাজার বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। এদিকে চীন, যেখান থেকে ২০২৪ সালে ১৬৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল, এখন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। চীনা পণ্যে মোট শুল্কহার ৪৬ থেকে ৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা মার্কিন ক্রেতাদের মধ্যে বিকল্প উৎসের খোঁজ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব পোশাক বাজারে নতুন করে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এখন সময় হয়েছে বাজার বৈচিত্র্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিকল্প গন্তব্যে রফতানি বাড়ানোর।
    যা বলছেন পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকরা:
    এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত আমাদের রপ্তানি আয়ের মূল ভিত্তি। চীন যেহেতু এই খাত থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে, আমাদের এখন সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাজারে আরো বড় অংশ নিতে পারি।
    তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখন দরকার একটি সমন্বিত রপ্তানি কৌশল, যাতে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, আইটি খাতসহ অন্যান্য খাতে বৈচিত্র্য আনা যায়।’ উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান যতটা গর্বের, ততটাই চ্যালেঞ্জিং।

    বিআলো/ইমরান

     

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031