মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের আবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় নিজের বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আবেদনও করা হয়েছে।
গত ৭ আগস্ট দাখিল করা এ আবেদনটি সোমবার (১১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার বেঞ্চে শুনানির তালিকায় ১৮ নম্বরে আসে। খায়রুল হকের পক্ষে শুনানি শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষ সময় প্রার্থনা করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে বলে উপস্থিত আইনজীবীরা জানান। আদালত শেষ পর্যন্ত শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ঠিক করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহমেদ। খায়রুল হকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, কামরুল হক সিদ্দিকী, জেড আই খান পান্না, মহসিন রশিদ, মোনায়েম নবী শাহীন ও মো. সেলিম।
কোর্ট থেকে বেরিয়ে এম কে রহমান জানান, প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষ সময় চাইলে আদালত বিকেল ৩টা পর্যন্ত সময় দেন। পরে আবারও সময় চাওয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের ১৮ জুলাইয়ের ঘটনার মামলায় চলতি বছরের ৬ জুলাই খায়রুল হককে ৪৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে, অথচ তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই। ঘটনার সময় তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী বলেন, “আমরা বুঝলাম, আমরা আইনশৃঙ্খলার ভেতরে নেই।
জেড আই খান পান্না বলেন, কোর্টের ভেতরে আইনজীবীরা একে অপরের ওপর আক্রমণাত্মক হবেন—এটা আদালতের ভাষা নয়, আচরণও নয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহমেদ জানান, তাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল এক সপ্তাহ সময় নেওয়ার জন্য। তিনি অভিযোগ করেন, খায়রুল হকের পক্ষে থাকা আইনজীবীরা জোর করে শুনানি চালাতে চেয়েছিলেন এবং পেছন থেকে হৈচৈ শুরু হয়।
গত ২৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এ মামলার বাইরে তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা রয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত রায় জালিয়াতির অভিযোগে ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় মামলা, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় মামলা ২৫ আগস্ট, প্লট দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এ বি এম খায়রুল হক এবং ২০১১ সালের ১৭ মে অবসরে যান। এরপর তিনি তিন দফায় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিআলো/এফএইচএস