শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে কঠোর হুঁশিয়ারি সরকারের
নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারকে বেআইনি ঘোষণা করে গণমাধ্যমকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত একজন পলাতক আসামির বক্তব্য প্রচার কেবল আইনের লঙ্ঘন নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার হুমকি তৈরি করে।
শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম আইন ও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য সম্প্রচার করেছে, যেখানে তিনি “মিথ্যা ও উসকানিমূলক মন্তব্য” করেছেন। এ ধরনের প্রচার ভবিষ্যতে ঘটলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেখ হাসিনার বক্তব্য বা অডিও সম্প্রচার করা ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। তাছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালও পূর্বে এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করেছিল।
সরকার দাবি করে, শেখ হাসিনা জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের সময় শত শত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীর ওপর হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ইতিমধ্যে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মুখোমুখি রয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং তাদের যেকোনো বক্তব্য প্রচার বা প্রকাশ বেআইনি। সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুসারে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইনের আওতায় পড়বে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানায়, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও গণতান্ত্রিক নীতির ভিত্তিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
বিবৃতির শেষে সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে বলা হয়, শেখ হাসিনার যেকোনো বক্তব্য, অডিও বা ভাষণ প্রচারে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করতে হবে। তার উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তৈরি এবং এগুলো প্রচার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অন্তরায় হিসেবে কাজ করতে পারে।
বিআলো/এফএইচএস