বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের খেতাব এথেল কাটারহামের দখলে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ বর্তমানে এথেল কাটারহাম। সম্প্রতি ১১৬ বছরে পা রাখা এথেল কিছুদিন আগেই উদযাপন করেছেন তার ১১৫তম জন্মদিন। এর আগে এই রেকর্ড ছিল ব্রাজিলের জোয়াও মারিনহো নেটোর দখলে, যিনি ১১২ বছর বয়সে মারা যান।
তবে এথেল বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নারী হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন। এর আগে এই খেতাব ছিল জাপানি নারী তোমিকো ইতোকার, যিনি ১১৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
১৯০৯ সালের ২১ আগস্ট ইংল্যান্ডের শিপটন বেলিঙ্গার, হ্যাম্পশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন এথেল কাটারহাম। বাবা-মা ও আট ভাইবোনের সংসারে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় কনিষ্ঠ সন্তান। বর্তমানে ভাইবোনদের মধ্যে জীবিত একমাত্র মানুষ তিনি। তার বোন গ্ল্যাডিস বাবিলাস ২০০২ সালের মার্চে ১০৪ বছর ৭৮ দিন বয়সে মারা যান।
জীবনের শুরু থেকেই এথেল ছিলেন এক রোমাঞ্চপ্রিয় নারী। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯২৭ সালে তিন সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ভারতে পৌঁছান তিনি এবং সেখানে এক ব্রিটিশ পরিবারে আয়ার কাজ করেন।
১৯৩১ সালে এক ডিনার পার্টিতে তার পরিচয় হয় ভবিষ্যৎ স্বামী ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা মেজর নরম্যান ক্যাটারহ্যামের সঙ্গে। ১৯৩৩ সালে তারা স্যালিসবারি ক্যাথেড্রালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পরবর্তীতে নরম্যানের চাকরির সূত্রে দম্পতি হংকং চলে যান, যেখানে এথেল স্থানীয় ও ব্রিটিশ শিশুদের জন্য একটি নার্সারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এখানেই জন্ম হয় তাদের দুই কন্যা—জেম ও অ্যানের।
১৯৭৬ সালে স্বামী নরম্যানকে হারান এথেল। এরপর কন্যারাও একে একে চলে যান। জেম মারা যান ২০০০ সালের শুরুতে এবং অ্যান ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৮২ বছর বয়সে ক্যানসারে মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে এথেল তার তিন নাতনি, পাঁচ প্রপৌত্র এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে জীবনযাপন করছেন।
দীর্ঘ জীবনের রহস্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি সুযোগকে গ্রহণ করুন, কারণ আপনি জানেন না সেটি আপনাকে কোথায় নিয়ে যাবে। সবসময় ইতিবাচক মনোভাব রাখুন এবং সবকিছু পরিমিতভাবে করুন।
এথেলকে ১৯০৯ সালে জন্মগ্রহণকারী শেষ জীবিত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনকি ১১০ বছর বয়সে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি বেঁচে যান, ফলে তিনি মহামারির সবচেয়ে বয়স্ক জীবিতদের একজন হিসেবে ইতিহাসে নাম লেখান।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
বিআলো/এফএইচএস