ছয় মাসে বদলে গেল ফেনী মডেল থানা: আস্থার প্রতীক ওসি শামসুজ্জামান
ভাঙাচোরা থানাকে জনবান্ধব সেবাকেন্দ্রে রূপ দিলেন ওসি শামসুজ্জামান
আজমির মিশু, ফেনী: সরকার পতনের পর ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফেনী মডেল থানা ভস্মীভূত হয়। বিধ্বস্ত সেই অবস্থাতেই থানার দায়িত্ব নেন ওসি মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। ভাঙাচোরা ভবন, পুড়ে যাওয়া আসবাব আর আতঙ্কগ্রস্ত পরিবেশের মাঝেও তিনি থানার কার্যক্রম সচল রাখেন। অল্প সময়েই থানাকে গড়ে তোলেন জনবান্ধব সেবার কেন্দ্রবিন্দুতে।
ঘুষমুক্ত থানার উদ্যোগ
চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি ফেনী মডেল থানার দায়িত্ব নেন। যোগদানের পর উপজেলা মাসিক সভায় প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, থানায় আর ঘুষ কিংবা দালাল প্রথার কোনো স্থান থাকবে না। তাঁর উদ্যোগে থানায় চালু হয় আলাদা হেল্প ডেস্ক, যেখানে হয়রানি ছাড়াই মানুষ জিডি, মামলা ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে পারছে। নিয়মিত তদারকির ফলে সেবাপ্রার্থীরা আগের চেয়ে সহজে ও স্বস্তিতে সেবা পাচ্ছেন।
অপরাধ দমনে সাফল্য
প্রশাসনিক পরিবর্তনের পাশাপাশি অপরাধ দমনেও দেখা যাচ্ছে সক্রিয়তা। থানা সূত্রে জানা যায়, গত ছয় মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতটি হত্যা মামলাসহ মোট ২২টি মামলায় পাঁচ শতাধিক এজাহারভুক্ত আসামি, চার শতাধিক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি এবং আশিজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছে। নিয়মিত মাদকবিরোধী ও সন্ত্রাস দমন অভিযানে এলাকাবাসীর মধ্যে নিরাপত্তা ও স্বস্তির অনুভূতি তৈরি হয়েছে।
পেশাদারিত্ব ও বিট পুলিশিং
ওসি শামসুজ্জামান বলেন, “মানুষের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় বিট পুলিশিং কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলার সার্বিক চিত্র স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হচ্ছে।”
সামাজিক সম্প্রীতি ও জনআস্থা
বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় অনেক দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, মাদক উদ্ধার, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও ভূমি দখল প্রতিরোধেও পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ছে। পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমে পুলিশের সক্রিয় অংশগ্রহণ জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিআলো/তুরাগ