একাধিক মামলার আসামি আ: লীগ নেতা রাজ্জাক খান ধরাছোঁয়ার বাইরে
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থবিষয়ক সদস্য ও মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ একাধিক হত্যা মামলা ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাগালের বাইরে রয়েছেন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন চীনে আত্মগোপনে থাকার পর সম্প্রতি গোপনে দেশে ফিরেছেন এবং সংগঠনের কাজে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। ওই সময়ে তার নামে থাকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজও সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে কোটি কোটি টাকা সমঝোতার মাধ্যমে তিনি দেশে ফিরে রাজনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন বলে বিভিন্ন মহল অভিযোগ করেছে।
ব্যাংক ঋণ ও অর্থপাচার
ব্যবসায়ী মহলের দাবি, রাজ্জাক খান ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। এসব অর্থ পরবর্তীতে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ ও মিনিস্টার গ্রুপের হাতে বিপুল ঋণ বিতরণের অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি মনিরুল মওলা গ্রেপ্তার হলেও রাজ্জাক খান এখনো বহাল তবিয়তে আছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, রাজ্জাক খান অতীতে তার প্রতিষ্ঠানের অফিসে ডেকে এনে জোরপূর্বক চুক্তিপত্রে সই করাতেন। কেউ অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও আর্থিক হয়রানি করা হতো। এছাড়া চাকরিজীবীদের বেতন থেকে নিয়মিত প্রভিডেন্ট ফান্ড কেটে রাখা হলেও চাকরি শেষে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক তৎপরতা
স্থানীয় সূত্র বলছে, তিনি সম্প্রতি গুলশানের একটি কার্যালয়ে নিয়মিত বৈঠক করছেন। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারবিরোধী তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি
গত বছর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা রাজ্জাক খান ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। চুয়াডাঙ্গাসহ তার নিজ এলাকায়ও স্থানীয়রা একই দাবি তুলেছেন।
হত্যা মামলা, ব্যাংক ঋণ জালিয়াতি, অর্থপাচার ও ভুক্তভোগীদের হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও এম এ রাজ্জাক খান রাজ এখনো আইনের বাইরে রয়েছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, তাকে দ্রুত গ্রেফতার না করলে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
বিআলো/এফএইচএস