• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    লঘু শাস্তিতে রেহাই : বেড়েই চলেছে বিমান ক্রুদের অপকর্ম 

     dailybangla 
    16th Sep 2025 8:12 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    *** টাকাওয়ালা দেখে বিয়ে করার প্রতারণা
    *** এসব অপকর্মে উদ্বিগ্ন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ
    *** কেবিন ক্রুদের স্বার্থ দেখাই ইউনিয়নের কাজ– শামীম আক্তার লোটাস- সাধারণ সম্পাদক –কেবিন ক্রু ইউনিয়ন
    *** যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কাজ করেন কেবিন ক্রুরা—মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া আবির, সভাপতি কেবিন ক্রু ইউনিয়ন
    *** ভবিষ্যতে আরো স্ট্রিকলি এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব– ড. মো. সাফিকুর রহমান, এমডি ও সিইও, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

    রতন বালো: দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েই চলেছে স্বর্ণপাচার। বিভিন্ন এয়ারলাইনসে করে প্রায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে স্বর্ণের চালান আসছে বাংলাদেশে। হযরত শাহজালালসহ তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করছে চোরাচালানিরা। অপর দুটি বিমানবন্দর হচ্ছে চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিভিন্ন কৌশল নিয়েও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। স্বর্ণপাচার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি টাকাওয়ালা যাত্রীদের দেখে টার্গেট নিয়ে বিয়ের প্রলোভনে প্রতারণা করার অপকর্মের ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

    এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টম হাউজের কমিশনার মুহম্মদ জাকির হোসেন বলেন, অবৈধ পণ্য ও সোনা ধরা পড়ছে। এ কারণে আমাদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সব কর্মকর্তাকে বলে দেওয়া হয়েছে, অবৈধ পণ্য যেন কোনোভাবেই বের হতে না পারে। কর্মকর্তারা নির্দেশ মতো দায়িত্ব পালন করছেন। কাস্টমসের প্রতিটি টিমের কর্মকর্তা সর্বোচ্চ দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। গোয়েন্দা সোর্স আরো বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে অন্য সংস্থার কর্মকর্তারাও সোনা পাচারকারীদের ধরার চেষ্টা করছেন। গতকাল এ বিষয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউ সাড়া দেননি।
    অভিযোগ রয়েছে, একের পর এক কেবিন ক্রু সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ায় রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তারা বেশি আয়ের লোভে গুরুতর এ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। কিন্তু আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা হয় না। কাস্টমস কর্মকর্তারা সোনা জব্দ করে শুধু বিমানে একটি চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেন। পরে বিমান প্রাথমিক তদন্ত করে সত্যতা মিললে বিভাগীয় মামলা করে। এদিকে আকাশপথে সোনা চোরাচালান চক্রে জড়াচ্ছেন রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রুরা। কিছুদিন পরপরই বিমানবন্দরে সোনাসহ ধরা পড়ছেন তারা। ধরা পড়লেও লঘু শাস্তি দিয়ে পুনরায় ফেরানো হচ্ছে চাকরিতে। সোনা পাচারে অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে নামমাত্র শাস্তি দিয়ে অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দিয়ে পুনরায় কাজে যোগদানের অনুমতি দিচ্ছে সরকারি সংস্থাটি।
    টাকাওয়ালা দেখেই কেবিন ক্রুদের নানা প্রতারণা:
    স্বর্ণ চোরাকারবারের পাশাপাশি টাকাওয়ালাদের দেখে প্রেমের সাড়া দিয়ে টাকা, স্বর্ণ, মোবাইল হাতিয়ে নেওয়ার পর অর্থাৎ দুই মাস পরই পাল্টান বেশির ভাগ বিমানবালারা। খাদিজা সুলতানা শিমু (৫৩৪২৯) ও এমএসটি মৌরি (৫৩৪৩৭)। পেশায় কেবিন ক্রু। চাকরি করেন জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। দুজনই ২০২৩ সালে ৪৬তম ব্যাচে নিয়োগ পেয়েছেন বিমানে। একসঙ্গে চাকরির সুবাদে তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে যান। অধিকাংশ সময়ই তারা বিমানের একই গন্তব্যে ডিউটি করতেন। এতে করে তাদের সখ্য আরো বেড়ে যায়।
    ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে আবেদনময়ী ছবি আপলোড করেন। ফেসবুকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির রিলসও পোস্ট করেন দুজন। এসব সম্পর্কের বাইরেও তাদের আরেকটি জায়গায় মিল রয়েছে। সম্প্রতি তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে হানিট্র্যাপের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ অর্থ ও উপহার হাতিয়ে নেওয়ার। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেন তারা। শিমু দেশীয় একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ও মৌরি কাতারস্থ প্রবাসী এক বাংলাদেশির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে প্রতারণা করেছেন। দুই বান্ধবীর হানিট্রাপের ফাঁদে ফেলে নিঃস্ব হয়েছেন ওই দুই প্রেমিক।
    উপায়ন্তর না পেয়ে শিমুর প্রেমিক আদালতে মামলা করেছেন। মামলাটির তদন্ত করছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। বিমানের প্রধান কার্যালয়েও অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। আর মৌরির প্রেমিক কোনো মামলা করেননি। তিনি শুধু বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিমানের বলাকা অফিসে আসা দুটি অভিযোগের তদন্ত করছে বিমান। আর শিমুর বিরুদ্ধে আদালতে করা মামলারও তদন্ত চলছে। এসব অভিযোগের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন-প্রাথমিকভাবে দুই বিমানবালার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। যারা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক চলাকালীন তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন।
    মৌরির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ:
    গত ২১ আগস্ট বিমানের কেবিন ক্রু মৌরির বিরুদ্ধে অভিযোগে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বাংলাদেশে ব্যবসা থাকার সুবাদে প্রতিনিয়ত বিমানে যাতায়াত করি এবং আমি বিমানের একজন নিয়মিত কাস্টমার। ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর কাতারের একটি হোটেলে মৌরি নিজেকে বিমানের কেবিন ক্রু হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমার সঙ্গে পরিচিত হোন। তখন আমার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান দেখে কমিটেড রিলেশনে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ১৬ অক্টোবর মৌরি আবার কাতারে এসে আমাকে ফোন করে হোটেল লবিতে ডেকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। আমি তাকে সরাসরি বলি যে আমি বিয়ের জন্য পাত্রী চাই। কিন্তু চাকরিজীবী কাউকে নয়। সে আমার শর্তে রাজি হয় এবং বিয়ের পর চাকরি ছেড়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করেন। আমি তাতে সাড়া দেই। পরদিন তাকে নিয়ে আমি লং ড্রাইভে নিয়ে বিচে যাই। ১৬ থেকে ২০ অক্টোবর মৌরি লে ওভারে আমার সঙ্গেই ছিল। এ সময় সে আমার কাছে শপিং করে দিতে আবদার করে। তার ইচ্ছাতেই আমি তাকে শপিং করে দেই।
    ১৪ ডিসেম্বর আমি লন্ডনে যাই একটি বিজনেস ট্রিপে। তখন মৌরি বিমানের সিডিউল ইনচার্জদের ম্যানেজ করে লন্ডনে যায়। ব্যবসায়িক কাজে যাওয়াতে ওখানে আমার ব্যস্ততা ছিল। কিন্তু সে তার কলিগসহ ঘুরতে এবং শপিং করিয়ে দিতে জোর করে আমাকে।

    অভিযোগে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর আমি বিজনেস মিটিংয়ে ঢাকায় আসি। চলতি বছর ৫ জানুয়ারি ফ্লাইট থেকে ফিরে আমার জন্মদিন পালন করে গুলশান ক্যাপিটাল ক্লাবে। তার সহকর্মী শিমুর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে সিলেটে যাওয়া ও আমাকে কক্সবাজারে নিয়ে যেতে বলে। আমি ব্যস্ততা থাকায় অপারগতা প্রকাশ করি। ১৪ ফেব্রুয়ারি মৌরি তার আরেক বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে হোটেল সেরিনায় সময় কাটানোর খবর জানার পর আমার সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। তারপর থেকে মৌরি আমাকে মানসিকভাবে উত্তেজিত করে আমার কথা রেকর্ড করে রাখত। মার্চের শেষ দিকে মৌরি কাতার প্রবাসী গাড়ির গ্যারেজের মালিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে হোটেল রুমে দেখাও করেছেন। এপ্রিল মাসেও কাতার গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা করেন।
    শিমুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ :
    বিমানবালা খাদিজা সুলতানা শিমুর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন, ‘হানি ট্র্যাপ’ ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে প্রায় ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ জুলাই ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন দেশের একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি একজন এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার। তার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পর ১১ মাসের সম্পর্কে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
    আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানাকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই সিআর মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কেবিন ক্রু শিমুর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে এবং তারা উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে প্রথমবার দেখা করেন। বাদীর উন্নত পেশা ও সামাজিক অবস্থানকে পুঁজি করে শিমু অল্প সময়ের মধ্যেই তার বিশ্বাস অর্জন করেন। তিনি বাদীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং নিজেকে ভবিষ্যৎ পুত্রবধূ হিসেবে উপস্থাপন করেন।

    পরবর্তীতে শিমু প্রস্তাব দেন তাদের বিয়ের সম্পূর্ণ খরচ বাদীকে বহন করতে হবে এবং সেই অর্থ অনুষ্ঠানের আগেই পরিশোধ করতে হবে। তার কথায় বিশ্বাস করে বাদী বিয়ের খরচ বাবদ মোট ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৫১১ টাকা প্রদান করেন। এর বাইরে আরো ৪ লাখ টাকা নগদ নেন তিনি। হীরার আংটিসহ সর্বমোট আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৫১১ টাকা। ওই টাকা হাতে পাওয়ার পর শিমুর আচরণে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি বিয়ে করতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানান।
    এ বিষয়ে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা মৌরির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের কাজ করছে ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগ। অভিযোগের ভিত্তি থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে। আর শিমুর বিষয়ে বিমানে কোনো অভিযোগ আসেনি। জেনেছি, তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।বিমানের গ্রাহক সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে সোনার বারসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়েন বিমানের কেবিন ক্রু মর্জিনা আক্তার এলিন। তখন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিমান কর্তৃপক্ষ।
    গত ১৮ মার্চ চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। সংস্থাটির তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পান তদন্তকারী কর্মকর্তা। বিমান প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে। এখানে কারও পক্ষে কাজ করার সুযোগ নেই। কেবিন ক্রুদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নজর রাখছে বিমান। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    গত ২৮ আগস্ট মর্জিনা আক্তার এলিনকে দুটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বন্ধের দণ্ড দিয়ে অফিস আদেশ জারি করে বিমান কর্তৃপক্ষ। একই অফিস আদেশে তার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারও করা হয়। ফলে কয়েক দিন আগে বিমানের গ্রাহকসেবা বিভাগে ফের যোগ দিয়েছেন ওই কেবিন ক্রু।
    ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর সোনার বারসহ শাহজালাল বিমানবন্দরে ধরা পড়েন কেবিন ক্রু সাদিয়া খানম। পরদিন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিমান। পরে গত বছরের ২৭ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাদিয়া খানমের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পান। কিন্তু তারপরও গত ১৭ আগস্ট সাদিয়া খানমকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড দিয়ে অফিস আদেশ জারি করে বিমান।
    সোনা চোরাচালানের আলোচিত যত ঘটনা :
    গত ৪ আগস্ট সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে বিজি-৩৪০ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান বিমানের জ্যেষ্ঠ কেবিন ক্রু রুদাবা সুলতানা। গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় তাকে সন্দেহ করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এ সময় তিনি পোশাকের ভেতরে লুকানো একটি টিস্যু পেপার বের করে পা দিয়ে স্ক্যানিং মেশিনের নিচে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। টিস্যুর ভেতর থেকে ২৪ ক্যারেটের ২৩০ গ্রাম ওজনের দুটি সোনার চেইন উদ্ধার করা হয়, যা অবৈধ পণ্য হিসেবে জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় গত ১২ আগস্ট তাকে বরখাস্ত করে বিমান কর্তৃপক্ষ। ওই বরখাস্ত আদেশে রুদাবার এ ধরনের আচরণ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে উল্লেখ করা হয়।
    এ বিষয়ে কেবিন ক্রু ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া আবির জানান, সম্মিলিত কেবিন ক্রু ঐক্যজোট কেবিন ক্রুদের উন্নয়নে ও বিমানের ইনফ্লাইট সার্ভিস উন্নত করতে সর্বতোভাবে কাজ করছে এবং সামনেও করবে।

    যারা যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কাজ করেন। কেবিন ক্রু ইউনিয়ন হলো বিমানসেবকদের সংগঠন, যেমন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু ইউনিয়ন, যারা নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করে। এই ইউনিয়নগুলো কর্মীদের অধিকার রক্ষা, কাজের পরিবেশ উন্নয়ন এবং অন্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করে।
    এদিকে কেবিন ক্রু ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামীম আক্তার লোটাস বলেন, সাধারণত বিমানের কেবিন ক্রুদের স্বার্থ দেখাই ইউনিয়নের কাজ। তারপরও নিয়ম অনুযায়ী কোনো কেবিন ক্রু অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে ইউনিয়নের একজন সদস্য থাকেন। ইউনিয়নের এ সদস্য নিরপেক্ষ থেকেই তদন্ত কাজে সহযোগিতা করেন। আবার অপরাধ এক ধরনের, কিন্তু শাস্তি ভিন্ন এমন ঘটনায় ইউনিয়ন সদস্য আপত্তি জানান।
    এদিকে গত ২০২৩ সালের জুনে সাতটি সোনার বার নিয়ে ঢাকায় ফেরার সময় সৌদি আরবের জেদ্দায় কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে আটক হন বিমানের কেবিন ক্রু জিয়াউল হাসান। তখন তাকে বিমান থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
    এ ঘটনায় বিমানের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মাছুদুল হাছান বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলাও করেন। এ মামলা এখনো চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। ২০২২ সালের ২১ জুনে সৌদি আরবের জেদ্দায় তিন কোটি টাকার সোনা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ ফ্লোরা নামে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক কেবিন ক্রু আটক হন। এ ঘটনায় তাকেও চাকরিচ্যুত করে বিমান কর্তৃপক্ষ।
    যা বলছেন বিমান এমডি :
    এ বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. মো. সাফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার পিএ কবির পরিচয় দিয়ে বলেন, স্যার মিটিং এ আছেন। পরে আপনার কথা বলবো। এর পর আর সাড়া নেই। কেবিন ক্রুরা বিমানে যোগ দেন গ্রুপ-৪ এ। পরে প্রমোশনের মাধ্যমে তাদের পদোন্নতি হয়। আইন অনুযায়ী, কেবিন ক্রুরা কেউ বড় ধরনের অপরাধ করলে তার চাকরি চলে যেতে পারে। আবার কেউ যদি একটি গোল্ডবার নিয়ে আসে এ জন্য তো তার চাকরি যাওয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে আমরা সেকেন্ড শাস্তি দেই। সেটা হলো র‌্যাংক ডিমোশন করি। কিন্তু নতুন যারা জয়েন করে তাদের ক্ষেত্রে যেহেতু ডিমোশনের সুযোগ নেই, তখন আমরা বলি এক বছর তার প্রমোশন হবে না, এক বছর বেতন বাড়বে না।

    বিআলো/ইমরান

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    2930