জান্নাতে প্রিয়নবীর সান্নিধ্য লাভের আমল
বিআলো ডেস্ক: প্রতিটি মুমিন প্রিয়নবী (স.)-এর সঙ্গ পাওয়ার সুপ্ত কামনা হৃদয়ে লালন করেন। এই আকুলতা থেকেই দেখবেন হজযাত্রীরা মদিনায় নবীজির রওজায় গিয়ে হাজির হন। তাঁর জিয়ারতের মাধ্যমে প্রশান্তি লাভ করেন। জান্নাতেও প্রিয়নবীজির সান্নিধ্য লাভ করবেন নবীপ্রেমিকরা।
এ আকাঙ্ক্ষা পূরণে কিছু আমলের কথা বলা হয়েছে হাদিস শরিফে। যেসব আমল পালন করলে মুমিন ব্যক্তি জান্নাতে তাঁর সান্নিধ্য লাভ করবেন। যার কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো-
বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শুনে রাখো, যে আমার ওপর বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করবে নিশ্চয় কেয়ামতের দিন সে আমার সর্বাধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত হবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ৩২৪৪৭)
বেশি বেশি সেজদা করা-
হজরত রাবিআহ ইবনে কাব (রা.) বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে রাতযাপন করতাম। একদিন আমি নবীজির অজু ও ইস্তিঞ্জা করার জন্য পানি আনলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার কিছু চাওয়ার থাকলে চাইতে পারো। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি আপনার সঙ্গে জান্নাতে থাকতে চাই।
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ওটা ছাড়া আর কিছু চাও কি? আমি বললাম, এটাই চাই। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে বেশি বেশি সেজদার দ্বারা তুমি এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করো। (মুসলিম: ৪৮৯)
নবীজিকে ভালোবাসা-
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, এক ব্যক্তি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, কেয়ামত কখন হবে? তিনি বলেন, তুমি কেয়ামতের জন্য কী জোগাড় করেছ? সে বলল, কোনোকিছু জোগাড় করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তার রসুলকে ভালোবাসি। তখন তিনি বলেন, তুমি তাদের সঙ্গেই থাকবে, যাদের তুমি ভালোবাসো।
উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, একবার রাসুল (স.) বললেন, আমি কি তোমাদের ওই ব্যক্তি সম্পর্কে অবগত করব না যে কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে? সাহাবায়ে কিরাম চুপ রইলেন। রাসুল (স.) একই প্রশ্ন করলেন দুই বা তিনবার। তখন তাঁরা বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! অবশ্যই বলুন। তিনি বললেন, সে হলো ওই ব্যক্তি, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর। (মুসনাদে আহমদ: ৬৭৩৫)
এতিমের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করা-
হজরত সাহাল বিন সাদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আমি ও এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব (তিনি তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি দিয়ে ইঙ্গিত করেন এবং এই দুটির মধ্যে তিনি সামান্য ফাঁক রাখেন)। (বুখারি: ৫৩০৪)
আনাস (রা.) বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার দ্বারা আমরা এত আনন্দিত হয়েছি যে অন্য কোনো কথায় এত আনন্দিত হইনি। আনাস (রা.) বলেন, আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসি এবং আবু বকর, ওমর (রা.)-কেও। আশা করি তাদের প্রতি আমার ভালোবাসার কারণে তাদের সঙ্গে জান্নাতে বসবাস করতে পারব, যদিও তাদের আমলের মতো আমল আমি করতে পারিনি। (মুসলিম: ২৬৩৯)
বিআলো/শিলি