ঈশ্বরদীতে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপির বহিষ্কৃত কয়েকজন সাবেক নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নেতাকর্মীরা রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
শনিবার(২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন।
সেখানে অভিযোগ করা হয়, বহিষ্কৃত পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম পিন্টু, তাঁর ভাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব মেহেদী হাসান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সামছুদ্দিন আহমেদ মালিথা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ তিনজন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তাঁরা বিএনপির নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়, জমি ও মসজিদের জায়গা দখল, সরকারি খাস জমি দখল এবং বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করছেন। এক জায়গার ইজারা নিয়েও পৌর এলাকায় একাধিক জায়গায় জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ওঠে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাকারিয়া পিন্টু ও তার ভাই মেহেদীর বিরুদ্ধে মোট ৬৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি হত্যা মামলা। বাকি মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে অপহরণ, ধর্ষণ, বিস্ফোরক দ্রব্য, অস্ত্র, ডাকাতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। বেশির ভাগ মামলা ঈশ্বরদী ও নাটোরের লালপুর থানায় নথিভুক্ত। মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা এলাকায় প্রকাশ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই ভোরে দেশি–বিদেশি অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। আতঙ্কিত কণ্ঠে তিনি বলেন, আজ সংবাদ সম্মেলন শেষে আমি বাড়ি ফিরতে পারব কি না সন্দেহ।
আরেকজন আহত ব্যক্তি জানান, ২০ দিন আগে জাকারিয়া পিন্টুর নির্দেশে তাকে রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের হাতে আমাদের জীবন-জীবিকা ধ্বংস হচ্ছে।’ অন্য এক ভুক্তভোগী বলেন, পিন্টুর ম্যানেজাররা আমাদের ওপর স্টিমরোলার চালাচ্ছে। ঈশ্বরদীতে তিনি সন্ত্রাসী কারখানা তৈরি করেছেন। ছোট ভাই মেহেদীকে নিয়ে এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ তিনজনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বহু নেতাকর্মী বাড়িছাড়া হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলেই হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, তারা স্থানীয়ভাবে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই কেন্দ্রীয়ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপ চান। তাদের দাবি, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা আমরণ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা ও যুবদল কর্মী সোহেল রানা, যুবদল কর্মী শামীনূর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী রাব্বী হোসেন, যুবদল কর্মী শাহীন সরদার, ছাত্রদল কর্মী হৃদয় হোসেন জীত, বিএনপির সারা ইউনিয়ন সহসভাপতি চাঁদ আলী ফকির ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন।
বিআলো/ইমরান