• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    দুর্গাপূজা : মন্দিরে মন্দিরে হচ্ছে উৎসবের আমেজ 

     dailybangla 
    23rd Sep 2025 9:00 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    বিশেষ প্রতিনিধি: আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব। এ দিন সায়ংকালে দেবীর বোধন করা হবে। বাঙালি হিন্দু সস্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার উদযাপনের মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। চন্ডীপাঠ আর আবাহনী গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ মহালয়া পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমেই দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

    সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা (প্রতিমার তৈরির কারিগর)। অভিজ্ঞ হাতের জাদুতে সূক্ষ্মভাবে গড়ে তুলছেন দেব-দেবীকে। দেবী দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিমা তৈরি করছেন তারা। মন্দিরে মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি সাজসজ্জার কাজ। তবে প্রতিমা তৈরির খরচ বাড়লেও মৃৎশিল্পীদের পারিশ্রমিক বাড়েনি। ফলে তাদের সারাবছরই কষ্টের মধ্যে দিন কাটে।

    সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর শুভ মহলয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গতি নাশিনীকে বরণের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। পূজা আনন্দময় করতে ক্লান্তিহীন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আয়োজকরা। সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা এখন প্রতিমা কারিগরদের। তাদের দম ফেলার ফুরসত নেই। শেষ মুহূর্তে তারা ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে রঙ তুলির আঁচড় দিতে। দেবী তৈরি এই কর্মযজ্ঞের শুরু প্রায় তিন মাস আগে। হাতের নিপুণ দক্ষতায় এঁটেলমাটি ও বেলেমাটির সমন্বয়ে বাঁশ, খড়, কাঠ দিয়ে গড়ছেন দৃষ্টিনন্দন আর বৈচিত্র্যময় প্রতিমা। সারাদেশের মতো ঢাকার প্রতিমা শিল্পীরাও সময় পার করছেন।

    সরেজমিনে দেখা যায়, পুরান ঢাকার নর্থব্রুক হল রোডের শ্রী শ্রী প্রাণ বল্লভ জিঁউ মন্দির, শাঁখারিবাজার ও সূত্রাপুরের বিভিন্ন স্থানে মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ১৪-১৫ ঘণ্টা এই কাজ করছেন তারা। আগের চেয়ে কাজ বেড়েছে, আবার খরচও বেড়েছে। তবে সেই তুলনায় পারিশ্রমিক বাড়েনি। প্রতিমা তৈরির উপকরণের দামও চড়া। উপকরণ হিসেবে এঁটেলমাটি, খড়, বাঁশ, কাঠ, সুতলি ইত্যাদি সংগ্রহ করতে গত বছরের চেয়ে এবার বেশি দাম গুনতে হচ্ছে।

    পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকার কে.জি গুপ্ত লেনে প্রতিমা তৈরি করছেন শিল্পী কিশোর সাহা। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রতিমা তৈরির সঙ্গে জড়িত। বাবা ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ছোটবেলায় এই কাজ শিখেছেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন। দেবী দুর্গা, গণেশ, কার্তিক সকলকে তৈরি করেছেন। ভালোবাসা ও ভালো লাগা থেকেই এ পেশায় যুক্ত হলেও এখন এটইা তার একমাত্র পেশা। কিন্তু এ পেশায় যে মজুরি পাওয়া যায়, তা পরিশ্রমের তুলনায় খুবই কম। পুজোর সময় হলেই প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা বাড়ে। বাকি সময় প্রতিমা-শিল্পীদের তেমন কদর থাকে না। তাই সারাবছরই কষ্টের মধ্যে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।

    আরেক মৃৎশিল্প রবীন্দ্রনাথ দাস জানান, বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পের কারিগর তিনি। তার পূর্ব পুরুষরাও একই কাজ করে গেছেন। দীর্ঘ ৪০ বছর এই পেশায় থাকলেও পরিবারের জন্য তেমন কিছু করতে পারেননি। আগে যে মজুরি পেতেন তা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলতো। তখন জিনিসপত্রের দাম কম ছিল। এখন দৈনিক ৬০০ টাকা করে মজুরি পেলেও তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, সুতলি, কাঠ, খড়, বাঁশ, মাটি সবকিছুর দাম বেড়েছে।

    এজন্য প্রতিমার দামও বেড়েছে। কিন্তু তাদের আয় বাড়েনি। বরং নিত্যপণ্যের মূল বৃদ্ধির কারণে সংসারের ব্যয় বেড়েছে। রাজধানীর শাঁখারিবাজার লেনের ৭৫ বছর বয়সী মৃৎশিল্পী হরিপদ পাল বংশ পরম্পরায় হরিপদ পাল প্রতিমা তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বছরের এই সময়টাতে কাজ থাকে শুধু। বাকি সময়টাতে তেমন কিছুই করার থাকে না। রোজগার কিংবা পরম্পরা রক্ষার চেয়েও প্রতিমা তৈরিকে ধ্যান মানেন তিনি। তাই এই বয়সেও সহযোগীদের নিয়ে দিনরাত বিশ্রামহীন কাজে ক্লান্তি নেই। মণ্ডপে মণ্ডপে নিজের তৈরি প্রতিমার পূজাতে প্রশান্তি বোধ করেন, এই প্রশান্তিতেই কাটাতে চান জীবনের বাকিটা সময় তিনি।

    উল্লেখ্য, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্টী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাষ্টমী ও পহেলা অক্টোবর মহানবমী পূজা হবে। এরপর ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এ বছর সারাদেশে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে রয়েছে ২৫৮টি পূজামণ্ডপ। ইতোমধ্যে মন্দির ও পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পূজা চলাকালে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।

    বিআলো/ইমরান

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    2930