• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    মুমিনের ঈদ: অনাবিল আনন্দের প্রতীক 

     dailybangla 
    04th Aug 2021 7:31 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    ‘ঈদ’ শব্দটি আরবি শব্দমূল ‘আউদ’ থেকে নির্গত। এর অর্থ যা ঘুরে ঘুরে বারবার আসে। ‘ফিতর’ শব্দের অর্থ ভেঙে দেওয়া, ইফতার করা।

    ঈদুল ফিতর মানে সে আনন্দঘন উৎসব, যা প্রতি বছর দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঘুরে ঘুরে আসে। ঈদ আসে সুশৃঙ্খল ও ভারসাম্যপূর্ণ উৎসবের আমেজ নিয়ে।

    নৈতিক, আত্মিক ও সামাজিক পরিশুদ্ধির সীমানা পেরিয়ে সামষ্টিক কল্যাণ নিয়ে ঈদ আসে। ঈদ আসে শুভ্র ও শুদ্ধতার প্রতীক হয়ে। তাকওয়ার শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নতুন জীবনে ফেরার অঙ্গীকার নিয়ে ঈদ আসে।

    রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতমণ্ডিত অফুরন্ত কল্যাণের সঙ্গে আলিঙ্গন করে ঈদ আসে। ঈদ আসে দোস্ত-দুশমন সবার প্রতি মিত্রতার হাত বাড়িয়ে দিতে।

    ঈদ আসে ধনী-গরীবের শ্রেণিবৈষম্য দূর করে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করাতে। ঈদ আসে পবিত্র বিনোদনে মনকে মাতিয়ে তুলতে, শুদ্ধ মননকে প্রশান্তির ছোঁয়ায় দোলাতে।

    ঈদ কী শুধুই উৎসব

    ঈদুল ফিতর একাধারে আনন্দোৎসব ও ইবাদত। এ আনন্দ আল্লাহর রহমত ও ক্ষমাপ্রাপ্তির, জাহান্নাম থেকে মুক্তির। এ আনন্দ সিয়াম-কিয়ামের তাওফিক লাভের শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতার।

    এ আনন্দে নেই কোনো অশ্লীলতা ও পাপ-পঙ্কিলতা। এ আনন্দে শুধুই সওয়াব ও পুণ্যময়তা। ধীরে ধীরে এ আনন্দ সংক্রমিত হতে থাকে হৃদয় থেকে হৃদয়ে। সদ্যপ্রসূত শিশু থেকে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবার দেহ-মনে ঈদের ছোঁয়া লাগে। হতদরিদ্র, এতিম, দুস্থ, নিঃস্ব ও শত শত ছিন্নমূল মানুষের মুখেও হাসি ফোটে কিছু টাকা, কিছু নতুন কাপড় পেয়ে।

    ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ী ও কর্মজীবীরাও এ সময় ব্যস্ত হয়ে পড়েন সমানতালে। ঈদ উপলক্ষে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুবিধা তাঁরাও ভোগ করেন। এভাবেই সর্বজনীন হয়ে ওঠে ঈদ।

    ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদুল ফিতর অর্থ রোজা খোলার আনন্দ। কিন্তু কেন সেই আনন্দ? আনন্দের জন্য তো কোনো কারণ থাকতে হবে! সুখবর পেলেই তো মানুষ আনন্দিত হয়!

    এক মাস রোজার সাধনার পর এই দিনে সেই সাধনার পুরস্কার হিসেবে ক্ষমা পাওয়াই সেই আনন্দের কারণ।

    হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা ঈদের দিন ফেরেশতাদের মধ্যে রোজাদারদের নিয়ে গর্ব করে বলেন, ‘হে ফেরেশতারা, আমার কর্তব্যপরায়ণ প্রেমিক বান্দার বিনিময় কী হতে পারে?’

    ফেরেশতারা বলেন, ‘হে প্রভু, পুণ্যরূপে পুরস্কার দান করাই তো তার প্রতিদান।’ আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব (রোজা) পালন করেছে। অতঃপর দোয়া করতে করতে ঈদগাহে গমন করেছে। সুতরাং আমার মর্যাদা, সম্মান, দয়া ও বড়ত্বের কসম! আমি তাদের দোয়া কবুল করব এবং তাদেরকে মাফ করে দেব।’ (বায়হাকি : ৩/৩৪৩)

    ইসলামে ঈদের প্রবর্তন

    মুসলমানরা প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়েন দ্বিতীয় হিজরি মোতাবেক ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ৩০ বা ৩১ মার্চ। ইসলাম-পূর্ব পৃথিবীর মানুষের জন্য বিভিন্ন আনন্দ উৎসব ছিল।

    তাদের নিজস্ব মনগড়া বানানো সংস্কৃতির চর্চা হতো। বিভিন্ন দিন-তারিখকে কেন্দ্র করে আনন্দের ঢাকঢোল বাজাত। তাদের সংস্কৃতি কিংবা আনন্দ উৎসবে ছিল না সভ্যতার শিক্ষা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত। তাদের উৎসব ছিল না সবার জন্য সমান উন্মুক্ত ও ভেদাভেদমুক্ত।

    মুসলমানদের ঈদ সংস্কৃতির আগে মদিনায় ‘নওরোজ’ ও ‘মেহেরজান’ নামে দুটি উৎসব পালিত হতো। দুটি উৎসবই পারস্য সংস্কৃতি ও সভ্যতার দর্পণ। বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে নাইরোজ এবং বসন্ত উৎসবকে উপলক্ষ করে মেহেরজান নামে দুটি বিনোদনমূলক উৎসব পালন করা হতো।

    অপরিশুদ্ধ মানব মননে আবিষ্কৃৎত দুটি উৎসবই বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা ও অশ্লীলতার কালো নিকৃষ্ট আঁধারে ছিল নিমজ্জিত। তাদের ভিত্তিহীন সংস্কৃতির মূলোৎপাটন করে শুদ্ধ সংস্কৃতির উদ্‌যাপনের পাঠ দিলেন মানবতার নবী মুহাম্মদ (সা.)।

    তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন, ‘প্রতিটি জাতির আনন্দ-উৎসব আছে। আর আমাদের আনন্দ-উৎসব হলো দুই ঈদ।’ (বুখারি, হাদিস : ৯৫২)

    ঈদ উৎসবে বর্জনীয়

    অত্যন্ত পরিতাপের সাথে বলতে হচ্ছে, ঈদের প্রবর্তন করেছে ইসলাম। কিন্তু আমাদের ঈদ উদযাপনে ইসলামের ছোঁয়া নাই। ঈদকে কেন্দ্র করে নাটক, সিনেমা, হারাম খেলাধুলার হিড়িক পড়ে সমাজে, এসব অবশ্যই বর্জনীয়।

    ঈদের জন্য নতুন ড্রেস মূখ্য নয়, এসব কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর ধান্ধা। চোখধাঁধানো বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই ঈদের জন্য পোশাক, মোবাইলসহ বিভিন্ন পন্যকে টার্গেট করে। কিনতে না পারলে কষ্ট পায়, আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। এসব ইসলামে অত্যন্ত গর্হিত।

    মহান আল্লাহ ইবাদতের মাধ্যমে সঠিকভাবে ঈদ উদযাপনের তাওফীক দান করুন। আমীন।

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031