বাংলাদেশ-চীন প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়িয়ে উন্নয়নের পথে: ফরিদা আখতার
নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের জন্য অপরিহার্য। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
আজ বিকেলে রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (NSU)-এর প্রধান অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ঢাকা-চায়না ডে ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
ফরিদা আখতার উদাহরণ টেনে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ চীন থেকে উৎপন্ন হয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত—এ নদী দুই দেশের সম্পর্কেরও গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৫ সালের ২৬ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে গিয়ে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করেছেন। এসব চুক্তি সংস্কৃতি, গণমাধ্যম, ক্রীড়া, স্বাস্থ্যসহ নানা খাতে সহযোগিতা বাড়াবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারাই দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এবং পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, জেলে, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, গবেষক ও বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এখন মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুধু অভ্যন্তরীণ চাহিদা নয়, মাছ ও মাছজাত পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চীন বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে পাশে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-চীনের ভবিষ্যৎ সহযোগিতা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাকুয়াকালচার প্রযুক্তি উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধির আধুনিক পদ্ধতি, আইওটি-ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু সহনশীল পশু আবাসন, রোগ নিয়ন্ত্রণ, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ব্যবস্থা, মাছ অবতরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের আধুনিকীকরণ, শুকনো মাছ ও মূল্য সংযোজন শিল্পে বিনিয়োগ। এসব পদক্ষেপ খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও শক্তিশালী করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ঢাকা-চায়না ডে দুই দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রতিফলন। বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে চীনা সংস্কৃতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে, যা গভীর বোঝাপড়া ও বন্ধন তৈরি করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক এখন এক ঐতিহাসিক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বিভিন্ন খাতে উভয় দেশ হাতে হাত রেখে এগোচ্ছে।
এনএসইউ উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনএসইউ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ সদস্য বেনজীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও চীনের কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিআলো/তুরাগ