ইসলামী দৃষ্টিতে অর্থ সঞ্চয়ের গুরুত্ব ও সঠিক পদ্ধতি
বিআলো ডেস্ক: সম্পদ সঞ্চয় ইসলামে নিষিদ্ধ নয়; বরং তা প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর। তবে শর্ত হলো, উপার্জন হতে হবে হালাল এবং ব্যয় হতে হবে পরিমিতির মধ্যে। কৃপণতা যেমন ইসলামে অপছন্দনীয়, তেমনি অপচয়ও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন, “তোমরা আহার করো ও পান করো, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।” (সুরা আরাফ : ৩২)। আবার কোরআনের অন্য আয়াতে কৃপণতার নিন্দা করে বলা হয়েছে, “যে সম্পদ জমা করে এবং বারবার তা গুণে দেখে।” (সুরা হুমাযাহ : ২)।
ইসলামী ইতিহাসে সাহাবিদের জীবন থেকে সঞ্চয়ের বাস্তব উদাহরণ পাওয়া যায়। জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) সামান্য পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তবে তিনি অকাতরে আল্লাহর রাস্তায় দান করতেন—কখনো অর্ধেক সম্পদ, কখনো হাজার হাজার স্বর্ণমুদ্রা, ঘোড়া ও উট।
একইভাবে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর রেশমি কাপড়ের ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ ছিল শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও জ্ঞানচর্চার মূল ভরসা।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনেও সঞ্চয়ের দৃষ্টান্ত আছে। হাদিসে এসেছে, তিনি বনু নজিরের খেজুর বিক্রি করে পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সংরক্ষণ করতেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৭)
অন্য এক হাদিসে সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.)-কে রাসুল (সা.) বলেছেন, উত্তরাধিকারীদের অভাবগ্রস্ত রেখে যাওয়ার চেয়ে স্বচ্ছল রেখে যাওয়া উত্তম। (বুখারি, মুসলিম)
ধর্মবিশারদদের মতে, এ নির্দেশনাগুলো প্রমাণ করে অর্থ সঞ্চয় ইসলামে বৈধ ও উৎসাহিত। তবে তা হতে হবে—
* হালাল উপায়ে উপার্জিত,
* অপচয়মুক্ত,
* পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার উপযোগী,
* সমাজকল্যাণে ব্যয়যোগ্য ও
* আখিরাতের প্রস্তুতির সহায়ক।
তাঁদের মতে, ইসলামী পদ্ধতিতে অর্থ সঞ্চয় একজন মানুষকে যেমন আত্মমর্যাদাশীল করে তোলে, তেমনি সমাজকে করে স্বনির্ভর।
বিআলো/শিলি