• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ন্যায়নির্ভর শক্তিতে রূপান্তর: চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ 

     dailybangla 
    27th Sep 2025 6:26 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ন্যায়নির্ভর শক্তিতে দ্রুত রূপান্তরের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান বিশেষজ্ঞদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবং টেকসই উন্নয়নের যাত্রা অর্জনে ন্যায়নির্ভর শক্তিতে দ্রুত রূপান্তরের গুরুত্ব বিষয়ে গভীর আলোচনা ও নীতিনির্ধারণী সুপারিশের মাধ্যমে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘ন্যায়নির্ভর শক্তিতে রূপান্তর: চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনার।

    পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ-এর প্রধান আয়োজনে সিআইআরডিএপি (CIRDAP)-এর এবি এ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও তরুণ জলবায়ু কর্মীরা অংশ নেন।

    সেমিনারে বক্তারা একমত হন যে, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা কমিয়ে একেবারে সবুজ ও ন্যায্য ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হলে ন্যায়নির্ভর শক্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দ্রুত রূপান্তর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তবে, এই ক্ষেত্রর প্রযুক্তিগত সক্ষমতার অভাব, অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা এবং সঠিক নীতির অনুপস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

    ধরা’র উপদেষ্টা ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যায়নির্ভর শক্তি ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. সাজেদ কামাল, ব্র্যান্ডাইস ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র।

    এছাড়া বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সাবেক অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; প্রফেসর আশিকুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; ড. শাকিলা আজিজ, সহকারী অধ্যাপক, স্কুল অফ বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; শফিকুল আলম, লিড অ্যানালিস্ট ফর বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (IEEFA); ড. শওকত আরা বেগম, বাংলাদেশ প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, সোলার ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন; শরীফ জামিল, সদস্য সচিব, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)।

    ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, দেশের আইন ও নীতিনির্ধারণী পরিবেশের কারণে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসা ন্যায়নির্ভর জ্বালানিতে রূপান্তর সম্ভব হচ্ছে না। ন্যায়নির্ভর জ্বালানিতে দ্রুত রূপান্তরের জন্য সরকার-বেসরকারি ও সকল প্রান্তিক অংশীজনকে একযোগে কাজ করতে হবে।

    ড. সাজেদ কামাল সেমিনারে মূল বক্তব্যে ন্যায়নির্ভর শক্তির বিভিন্ন উদ্ভাবনী বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ন্যায়নির্ভর শক্তিতে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজন নিচুস্তরের উদ্ভাবন। বিশ্বের নানা অঞ্চলের মানুষ স্থানীয় চাহিদার উপর ভিত্তি করে সৌর শক্তি বা ন্যায়নির্ভর শক্তির নিচুস্তরের উদ্ভাবন তৈরি করেছে।

    বাংলাদেশের চাহিদা এবং প্রাকৃতিক অবস্থার উপর ভিত্তি করেও উদ্ভাবন করা সম্ভব।

    অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমাদের দ্রুত ন্যায়নির্ভর জ্বালানি স্থানান্তরে বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

    আমাদের কয়লার উৎপাদন নেই, সে কারণে আমরা খুব সহজেই জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে ন্যায়নির্ভর জ্বালানির দিকে আসতে পারব। জাপান, রাশিয়া, চীন, আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন থেকে সরে আসতে পারছে না। কিন্তু আমাদের এই সুযোগ রয়েছে।

    এজন্য তরুণ প্রজন্মকে সৌর শক্তি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে তারাই পরবর্তী নীতি তৈরি করবে।

    শরীফ জামিল বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমাদেরকে ন্যায়নির্ভর শক্তির রূপান্তরের দিকে যেতে হবে।

    কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় জীবাশ্ম জ্বালানির প্ল্যান্ট হওয়ায় পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয়ের চরম পরিস্থিতি প্রকাশ পাচ্ছে।

    দেশের মানুষ ও পরিবেশকে বাঁচাতে এখনই দ্রুত রূপান্তরের দিকে যেতে হবে।

    প্রফেসর আশিকুর রহমান বাংলাদেশের সৌর শক্তির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তথ্য ও গবেষণা ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

    তিনি তার গবেষণার তথ্য থেকে জানান, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ চাহিদার ৫.২২% ন্যায়নির্ভর শক্তির মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে। তা আগামী ২০৩০ সালে ১১% এ উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে জমির অভাব, মানুষের অভ্যাস এবং কৃষিজমির ব্যবহার বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিদ্যমান।

    ড. শাকিলা আজিজ বাংলাদেশের ন্যায়নির্ভর শক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।

    তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সূর্যের প্রাবল্য অনেক বেশি হওয়ায় সৌর শক্তি উৎপাদন সম্ভব, আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ু, বায়োমাস এবং সরকারি জমি ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের দেশে ন্যায়নির্ভর শক্তির উৎপাদন সম্ভব। আমাদের ভিন্নভাবে চিন্তা করতে হবে।

    শফিকুল আলম বলেন, এখনো আমরা বিদ্যুতের জন্য আমদানির উপর নির্ভরশীল। আমাদের ন্যায়নির্ভর শক্তি উৎপাদনকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা জরুরি।

    ড. শওকত আরা বেগম বলেন, পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানোর জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে ন্যায়নির্ভর জ্বালানিতে যেতে হবে।

    এছাড়া তরুন জলবায়ু সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সোহানুর রহমান, পরিচালক, ব্রাইটারস, যুবায়ের প্রতিম, লিড সেইফগার্ড এন্ড পলিসি মেকিং, ক্লাইমেট ফ্রন্টিয়ার, শামস খান, নির্বাহী পরিচালক, গ্লোবাল ল’ থিংকার্স সোসাইটি, আহসান রনি, নির্বাহী পরিচালক, মিশন গ্রীন বাংলাদেশ, আসাদুজ্জামান তুহিন, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ওএবি ফাউন্ডেশন, মাস্তুরা খাতুন, ফোকাল পয়েন্ট জেন্ডার জাস্টিস এন্ড ইকুইটি, ইয়োথ এনভায়রণমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন।

    সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় বক্তারা একমত হন যে, এই রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সফল করতে সরকার, সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ এবং বেসরকারি খাতকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

    আয়োজক সংস্থা ধরা এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আশা করে এই আলোচনা নীতিনির্ধারক মহলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে এবং টেকসই সবুজ জ্বালানি ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহায়ক হবে।

    বিআলো/এফএইচএস

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    2930