আনিসুলের পিএস তৌফিকা করিমের ১১৪টি ব্যাংক একাউন্ট জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) তৌফিকা করিমের নামে পরিচালিত ১১৪টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত এ আদেশ দেন। এসব হিসাবে প্রায় ৬৫৩ কোটি টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগই অবৈধ উৎস থেকে এসেছে বলে অভিযোগ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এসব হিসাবের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন হয়েছে প্রায় ৬৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫৬৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হলেও বর্তমানে প্রায় ৮৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা জমা রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তৌফিকা করিম সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে আদালতে জামিন বাণিজ্য, নিয়োগ ও বদলির তদবিরসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। পরে সেই অর্থ দিয়ে ফ্ল্যাট, গাড়ি ও জমি কেনা ছাড়াও বিদেশে পাচার করেন, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
আদালতের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, এই অর্থ অন্যত্র স্থানান্তরের আশঙ্কা থাকায় তদন্তের স্বার্থে হিসাবগুলো অবরুদ্ধ রাখা জরুরি। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) স্থায়ীভাবে হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জব্দ করার স্বপক্ষে আদালত যেসব যুক্তি দেয়া হয়- অভিযুক্ত তৌফিকা করিম সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী ও সাবেক পিএস। তিনি আইনমন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে আদালতে আসামি জামিন, নিয়োগ বাণিজ্য, বদলির তদবিরসহ নানা অপকর্ম করে উপার্জন করেন। উপার্জিত অর্থ দ্বারা ফ্ল্যাট, গাড়ি ও জমি ক্রয় করাসহ বিদেশে অর্থপাচার করে মানিলন্ডারিংয়েল অপরাধ করায় তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ১১৪টি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়।
এসব একাউন্টে মোট ছয়শত ৫৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার ১৩১ টাকা জমা এবং পাঁচশত ৬৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। হিসাবগুলোতে বর্তমানে ৮৬ কোটি ৯৮ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৬ টাকা স্থিতি রয়েছে।
ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তি ক্ষমতার অপ-ব্যবহার করে সংঘবদ্ধভাবে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ২ (শ) (২৬) ও (১৪) ধারা মতে সম্পৃক্ত অপরাধ। তাই ব্যাংক হিসাবগুলো ফ্রিজ করা একান্ত প্রয়োজন। ফ্রিজ না হলে অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর হতে পারে।
অতএব, সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪(১) ধারা মোতাবেক উপরোক্ত হিসাবগুলো স্থায়ী অবরুদ্ধকরণের জন্য পরিচালক বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল, ঢাকাকে আদেশদানে আপনার সদয় মর্জি হয়।
বিআলো/শিলি