তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়: পিআইডি-কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা ঘোষণা
সচিবালয়ের ধারাবাহিকতায় সরকারি দপ্তরে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সচিবালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) মুক্ত ঘোষণার ধারাবাহিকতায় এবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং তথ্য অধিদফতর (পিআইডি) আনুষ্ঠানিকভাবে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের পরিবেশবান্ধব নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কার্যক্রমে একবার ব্যবহারযোগ্য সব ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার বন্ধ থাকবে। তার পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব বিকল্প সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের তদারকি করবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে— প্লাস্টিকের ফাইল ও ফোল্ডারের বদলে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব উপকরণে তৈরি ফাইল ও ফোল্ডার ব্যবহার করতে হবে। প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে কটন বা জুট ফেব্রিকের ব্যাগ, আর প্লাস্টিক বোতলের পরিবর্তে কাঁচের বোতল ও গ্লাস ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া প্লাস্টিকের ব্যানারের পরিবর্তে কটন ফেব্রিক, জুট ফেব্রিক বা বায়োডিগ্রেডেবল উপকরণে তৈরি ব্যানার ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দাওয়াতপত্র, ভিজিটিং কার্ড ও প্রচারপত্রে প্লাস্টিক লেমিনেশন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সভা, সেমিনার বা অফিসের অনুষ্ঠানে খাবারের প্যাকেট যেন কাগজের তৈরি বা পরিবেশবান্ধব উপকরণের হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য— যেমন প্লেট, কাপ, স্ট্র বা কাটলারি— ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্লাস্টিকের কলমের পরিবর্তে পেনসিল বা কাগজের কলম ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়া বার্ষিক প্রতিবেদন বা অন্যান্য প্রকাশনায় লেমিনেটেড মোড়ক ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফুলের তোড়ায়ও প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধের নির্দেশ এসেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও পিআইডির এই পদক্ষেপকে পরিবেশ সংরক্ষণের এক বাস্তব দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, এটি শুধু একটি প্রশাসনিক ঘোষণা নয়, বরং সরকারি দপ্তরগুলোকে পরিবেশবান্ধব চর্চায় উৎসাহিত করার অংশ।
এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সচেতনতার পাশাপাশি ব্যবহারিক অভ্যাস পরিবর্তনে গুরুত্ব দিচ্ছি। সরকারি পর্যায় থেকে শুরু করলে সাধারণ মানুষও অনুপ্রাণিত হবে।”
পরিবেশবিদদের মতে, সরকারি পর্যায়ে প্লাস্টিকমুক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ধীরে ধীরে দেশের সব মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, যা পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিআলো/তুরাগ