পুরোনো টায়ার পুড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বার আউলিয়া বিল এলাকায় রাধিকা-নবীনগর সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে একটি সাইনবোর্ডবিহীন অবৈধ কারখানা, যেখানে পুরোনো টায়ার পুড়িয়ে সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত বিটুমিন জাতীয় কালো তৈলাক্ত পদার্থ উৎপাদন করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলায় কারখানাটি বন্ধ থাকে, তবে সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। রাতের আঁধারে চুল্লিতে আগুন জ্বালানো হয় এবং সারারাত ধরে টায়ার পুড়িয়ে উৎপাদিত কালো পদার্থ লোহার কনটেইনারে সংরক্ষণ করে পরে বাজারজাত করা হয়।
এ সময় চিমনি দিয়ে নির্গত হয় কালো বিষাক্ত ধোঁয়া, যা পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিলের জলাশয়, গাছপালা ও আশপাশের জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, টায়ার পোড়ানো পরিবেশের জন্য অত্যন্ত বিপর্যয়কর একটি প্রক্রিয়া। এতে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইডসহ বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস। টায়ারের ছাইয়ে থাকা ভারী ধাতু ও রাসায়নিক যৌগ মাটি ও ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত করে।
ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্রমিকদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, ত্বক ও শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগের ঝুঁকি শতভাগ বৃদ্ধি পায়।
বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা তৈরি করেছে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা সংগঠন ‘নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন তরী বাংলাদেশ’। সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিদর্শক মো. রাকিবুল হাসান বলেন, “বিষয়টি তরী বাংলাদেশের মাধ্যমে আজই জানতে পারি। কারখানাটির পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন নেই, এবং এ ধরনের কারখানার অনুমোদনের সুযোগও নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিআলো /এফএইচএস