প্রতিযোগিতাময় পৃথিবীতে টিকে থাকতে কারিগরি শিক্ষা অপরিহার্য: মির্জা ফখরুল
শেখ ফরিদ উদ্দিন: এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা দিতে মাসিক ম্যাগাজিন ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’র উদ্যোগে রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “পৃথিবী এখন প্রতিযোগিতার পৃথিবী হয়ে গেছে। তুমি যদি টিকতে না পারো, তুমি নিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে। সেই জায়গায় তোমাকে পৌঁছাতে হবে, আর তার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে।”
কারিগরি শিক্ষার অপরিহার্যতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রতিযোগিতার এই পৃথিবীতে কারিগরি শিক্ষা এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে দেশে কারিগরি শিক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, উন্নত কোনো ইনস্টিটিউটও নেই। ভোকেশনাল সেন্টারগুলো আমরা তৈরি করি না। আমরা বিএ পাস, এমএ তৈরি করছি। তাহলে এই তরুণরা বিকশিত হবে কীভাবে?”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে কর্মমুখী করতে হলে সরকারকে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে মনোযোগী হতে হবে।”
বর্তমান সময়ের প্রজন্মকে ‘জেন জি’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের এখন একটা ক্রান্তিকাল চলছে, এক ধরনের ট্রানজিশনাল পিরিয়ড… খুব অস্থিরতা আছে। এই অস্থিরতাকে আমাদের অতিক্রম করতে হবে। এই যে এখানে তো সব ‘জেন জি’, তাই তো? নাকি ভুল বলছি?”
তিনি আরও বলেন, “রাশেদা বেগম হীরা যখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সঙ্গে হিজবুল বাহারে সমুদ্র ভ্রমণে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তাকে সমুদ্র সম্পর্কে জানানো হয়েছিল— তখনকার সময় আর এখনকার সময় তো এক নয়। এখন ওরা ওই ছোট্ট সেট (মোবাইল ফোন) দিয়ে গোটা পৃথিবীকে পেয়ে যায়। অনেকে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি জানে— এটা আমাদের বুঝতে হবে। এই জানাটাকে, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতাটাকে মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করতে হবে, ধ্বংসের জন্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আজকে গোটা পৃথিবীতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমরা যদি মানবকল্যাণে কাজ করি, সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি, তাহলেই সমাজ এগিয়ে যাবে। আল্লাহ যেন তোমাদের এমনভাবে গড়ে তোলেন, যাতে তোমরা সঠিকভাবে মানুষ হতে পারো। একটা দেশে ‘মানুষ হওয়া’ই সবচেয়ে বড় কাজ।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি রাশেদা বেগম হীরা। বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, বিএনপির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক হারুন অর রশিদ, শিক্ষাবিদ এম এ সাজ্জাদ, ড. অ্যাডভোকেট জমিরুল আকতার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের আহ্বায়ক কবীর হোসেন, সদস্য সচিব কাজী শওকত হোসেন এবং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহবুব আহমেদ শামীম।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ বিএনপির সদস্য মোশাররফ হোসেনসহ কৃতি শিক্ষার্থীরা।
বিআলো/তুরাগ



