রায়পুরে নিম্নমানের তুলা ও ঝুট দিয়ে তৈরি নকল স্যানিটারি প্যাড!
নিজস্ব প্রতিবেদক: নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জরায়ু ক্যানসার ও প্রজননতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে সচেতন নারীরা যেখানে উচ্চমানের স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করছেন, সেখানে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী চক্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের তুলা ও ঝুট ব্যবহার করে তৈরি করছে নকল স্যানিটারি প্যাড। এসব নকল পণ্য নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে ভয়াবহভাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এমন নিম্নমানের স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি ও বাজারজাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ‘রোজ’ নামের একটি ব্র্যান্ড ব্যবহার করে প্রতারক চক্রটি অবৈধভাবে এসব প্যাড তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়পুর-হায়দরগঞ্জ সড়কের পৌরসভার খাজুরতলা এলাকায় শাহজাহান নামের এক সার ব্যবসায়ীর ভবনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব নকল ন্যাপকিন উৎপাদন চলছে। কারখানায় ব্যবহৃত তুলা ও ঝুটের নিম্নমান নারীর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই অবৈধ কারখানাটি পরিচালনা করছেন রায়পুর শহরের মেঘনা (প্রাইভেট) হাসপাতালের পরিচালক মোশাররফ হোসেন। নারী ও শিশু শ্রমিকদের দিয়ে “রোজ কোম্পানি”র নামে অনুমোদনবিহীন এই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ন্যাপকিন প্যাড উৎপাদন চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কারখানার একাধিক শ্রমিক জানান, “আমরা কমিশন ভিত্তিতে কাজ করি। প্রতি একশ পিস প্যাড তৈরি করলে ২০ থেকে ৪০ টাকা মজুরি পাই। কারখানার কাগজপত্র বৈধ কি না, তা আমরা জানি না।”
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, অনুমোদনবিহীন ও নিম্নমানের এসব স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারে নারীদের ত্বকের সংক্রমণ, প্রজননতন্ত্রের সমস্যা এমনকি জরায়ু ক্যানসারের আশঙ্কা রয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লক্ষ্মীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মনির হোসেন বলেন, “বিএসটিআই বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্যানিটারি প্যাড উৎপাদনের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। কারখানার সব বৈধ কাগজপত্র আছে। মোবাইলে বিস্তারিত জানাতে পারব না—আপনারা হাসপাতালে এসে দেখে যান।”
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান কাউছার বলেন, “নকল স্যানিটারি প্যাড তৈরির অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিআলো/শিলি



