মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাবে শুধু যোগ্য এজেন্সি: কড়া শর্তে নতুন তালিকা
বিআলো ডেস্ক: মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে এমন রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দিতে, যারা নতুনভাবে নির্ধারিত কঠোর মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বাংলাদেশ হাইকমিশনকে পাঠানো এক চিঠিতে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এসব যোগ্য এজেন্সির নাম জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
নতুন প্রক্রিয়ার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে অনুমোদিত এজেন্সির সংখ্যা ‘যৌক্তিকীকরণ (rationalisation)’ করা এবং একটি ‘যোগ্যতাভিত্তিক যাচাই প্রক্রিয়া’ চালু করা। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে এ তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের কাজে ব্যবহার করবে।
চিঠিতে বলা হয়, এই কাঠামোর মাধ্যমে স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও গঠনমূলক শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করা হবে। তবে শ্রমিক অধিকারকর্মীরা এই উদ্যোগ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, ‘র্যাশনালাইজেশন’-এর আড়ালে পুরনো ‘সিন্ডিকেট ব্যবস্থা’ আবারও নতুন রূপে ফিরে আসতে পারে।
কুয়ালালামপুরভিত্তিক শ্রম অধিকার বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডি হল বলেন, “যদি মানদণ্ডগুলো বাস্তবভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে অল্প কয়েকটি এজেন্সিই টিকে থাকবে- এমনকি তাদের মধ্যেও কেউ কেউ শর্ত পূরণ করতে পারবে না। এটা ‘র্যাশনালাইজেশন’ নয়, বরং ‘সিন্ডিকেশন’ মনে হচ্ছে।”
মালয়েশিয়া সরকার যেসব মানদণ্ডে যোগ্য এজেন্সি বাছাই করবে, তার মধ্যে রয়েছে-
* অন্তত পাঁচ বছরের লাইসেন্সধারী হতে হবে,
* গত তিন বছরে কমপক্ষে ৩,০০০ শ্রমিক পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে,
* তিনটি দেশে শ্রমিক পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে,
* ১০,০০০ বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী অফিস,
* সুশৃঙ্খল আচরণের সনদ ও বৈধ লাইসেন্স,
* আন্তর্জাতিক নিয়োগদাতার পাঁচটি লিখিত সুপারিশপত্র,
* এবং নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও আবাসন সুবিধাসম্পন্ন কেন্দ্র।
বাংলাদেশ–মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে ‘সিন্ডিকেট’ ইস্যু দীর্ঘদিনের। পূর্বে মাত্র ১০০টি এজেন্সিকে শ্রমিক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যা একচেটিয়া ও শোষণমূলক বলে সমালোচিত হয়।
যদিও মালয়েশিয়া সরকার দাবি করছে নতুন কাঠামোটি স্বচ্ছতা ও নৈতিক নিয়োগ বাড়াবে, পর্যবেক্ষকদের মতে কঠোর যোগ্যতার শর্ত শেষ পর্যন্ত অল্প কিছু প্রভাবশালী এজেন্সির পক্ষেই সুবিধাজনক হতে পারে।
বিআলো/শিলি



