বেহুলা দরদী: সিনেমায় স্নিগ্ধার ভিন্নধর্মী চরিত্রে আত্মপ্রকাশ
টিভির পর স্নিগ্ধা’র চলচ্চিত্র যাত্রা!
৩১ অক্টোবর মুক্তি পেতে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের লোকজ গল্পভিত্তিক এই চলচ্চিত্র
হৃদয় খান: মঞ্চ থেকে টেলিভিশন নাটক—অভিনয়ের প্রতিটি ধাপেই দক্ষতার ছাপ রেখে চলেছেন বিক্রমপুরের মেয়ে স্নিগ্ধা হোসেন। এবার তিনি পা রাখছেন বড় পর্দায়। আগামী ৩১ অক্টোবর মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত চলচ্চিত্র ‘বেহুলা দরদী’, যার মাধ্যমে সিনেমায় নতুন যাত্রা শুরু হচ্ছে এই ব্যস্ত টেলিভিশন অভিনেত্রীর।
ছবিটি পরিচালনা করেছেন নাট্যনির্মাতা সবুজ খান, আর প্রযোজনা করেছেন জাহিদ ইসলাম। বাংলাদেশের টাঙ্গাইল অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতি ও বেহুলা নাচারি গীতিনাট্য অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে স্নিগ্ধা অভিনয় করেছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ পতিতা চরিত্রে।
নিজের অভিনীত চরিত্র সম্পর্কে স্নিগ্ধা বলেন, “বেহুলা দরদী ছবিতে আমার চরিত্রটি একেবারেই ভিন্নধর্মী। এমন একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে আমি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দর্শকরা ছবিটি দেখলে নিশ্চয়ই নতুন কিছু অনুভব করবেন।”
অভিনয়ের পাশাপাশি ছবির গল্প নিয়েও বেশ উচ্ছ্বসিত স্নিগ্ধা। তিনি বলেন, “অনেক দিন ধরে গ্রামীণ ঐতিহ্য নিয়ে মৌলিক গল্পের চলচ্চিত্র হচ্ছে না। সেই জায়গা থেকেই ‘বেহুলা দরদী’ অনন্য একটি উদ্যোগ। নির্মাতা সবুজ ভাই নিজ এলাকার সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন নিজের চলচ্চিত্রে—এটি প্রশংসনীয়। আমাদের সবাই সেরাটা দিয়েছি। আশা করি দর্শকও ভালোবাসবে।”
চরিত্র নির্বাচনে কোনো বাঁধাধরা নিয়মে বিশ্বাসী নন এই অভিনেত্রী। সাধারণত কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেন—এমন প্রশ্নে স্নিগ্ধা জানান, “নায়িকাই হতে হবে বা গ্ল্যামারাস চরিত্রেই অভিনয় করতে হবে—এমন চিন্তা আমার নেই। আমি সবসময় বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করি। মঞ্চ থেকে টেলিভিশনে আসার অভিজ্ঞতা আমাকে অভিনয়ের গভীরতা শিখিয়েছে। তাই গ্ল্যামারের পেছনে নয়, আমি চরিত্রের গভীরতায় বিশ্বাস করি।”
পরিচালক সবুজ খানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “বেহুলা দরদীতে এমন শক্তিশালী চরিত্রে আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য তার প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।”
দৃষ্টিপাত নাট্য সংসদের নিয়মিত শিল্পী স্নিগ্ধা হোসেনের অভিনয়যাত্রা শুরু উন্মুক্ত থিয়েটারের মাধ্যমে। প্রায় দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি টেলিভিশন নাটকে পেশাদার শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন। শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘বাবার ছেলে’, ‘দুঃস্বপ্নের রাত’, ‘মায়ের কষ্ট’, ‘রেশমি তুমি কার’, ‘ঠিকানা বদল’, ‘বোকা বোকা প্রেম’, ‘নব্বই দিন’, ‘মন ডাকাতির দিন’, ‘মায়ার সংসার’, ‘চার বউ এক স্বামী’, ‘বিয়ে বাড়িতে চোর’, ‘ক্রাইম ফিকশন’ ইত্যাদি।
চলচ্চিত্রে এর আগেও তিনি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘পোস্ট মাস্টার ৭১’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এবার ‘বেহুলা দরদী’তে নতুন আঙ্গিকে নিজেকে হাজির করছেন তিনি।
এই ছবিতে স্নিগ্ধা হোসেন ছাড়াও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, সূচনা সিকদার, প্রাণ রায়, আজিজুন মীম, আশরাফুল আশীষ, আলমগীর হোসেন, শেখ মিরাজুল, সেলজুক, সানজিদা মিলা, হাসিমুন, রেশমি, ইমরান হাসু, মনিষা সিকদার, নয়ন, আফফান মিতুলসহ আরও অনেকে।
টেলিভিশন নাটকের ব্যস্তমুখ স্নিগ্ধা হোসেন এখন বড় পর্দার নতুন মুখ। মঞ্চ থেকে শুরু করে টেলিভিশন, আর এবার চলচ্চিত্র—সব জায়গাতেই অভিনয়ের ছোঁয়ায় তিনি দর্শকের মন জয় করতে চান। তার বিশ্বাস, “দর্শক যদি ‘বেহুলা দরদী’ ভালোবাসে, তাহলে এই ছবিই হবে আমার চলচ্চিত্র জীবনের আসল শুরু।”
বিআলো/তুরাগ



