• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করে খাদ্য চাহিদা মিটানো সম্ভব: আরজু আক্তার 

     dailybangla 
    29th Oct 2025 8:53 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ধান আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য। তাই এর সাথে দেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত । ঘন বসতিপূর্ণ এ দেশের জনসংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে, অপরদিকে বাড়িঘর, কলকারখানা, হাট-বাজার, সড়ক-জনপথ স্থাপন এবং নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি কারণে আবাদি জমির পরিমাণ প্রতিনিয়ত কমছে। তদুপরি রয়েছে খরা, বন্যা, জোয়ার-ভাটা, লবণাক্ততা, শৈত্য প্রবাহ ও শিলাবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ । এসব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে বেশি ধান উৎপাদন করে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য । বাংলাদেশ পৃথিবীর ধান উৎপাদনকারী দেশ গুলোর মধ্যে তৃতীয় হলেও এখানকার হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৪.২ টন। চীন, জাপান ও কোরিয়ায় এ ফলন হেক্টর প্রতি ৬-৬.৫ টন। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে ধানের ফলন বাড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। সনাতন জাতের ধান এবং মান্ধাতার আমলের আবাদ পদ্ধতির মাধ্যমে এ চাহিদা পূরণ করা অসম্ভব। এজন্য প্রয়োজন উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধান ও আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তির ব্যাপক প্রচলন । বাংলাদেশে ১৯৬৮ সালে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) থেকে প্রথম উফশী জাতের ধান (আইআর ৮) মাঠ পর্যায়ে চাষাবাদ শুরু হয়। খাটো আকৃতির এ উফশী ধান থেকে প্রতি হেক্টরে ৫-৬ টন (বিঘা প্রতি ১৮-২১ মণ) ফলন পাওয়া যায়। তখন থেকে উফশী ধান লোকমুখে ইরি ধান নামে পরিচিতি লাভ করে । বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মৌসুম ও পরিবেশ উপযোগী উফশী ধানের জাত এবং ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ফসল, মাটি, পানি, সার ইত্যাদি বিষয়ক কলা কৌশল উদ্ভাবন করছে।

    আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষউন্নত জাত ব্যবহার: ব্রি ধান-এর মতো আধুনিক জাত ব্যবহার করা, যা রোগ-প্রতিরোধী, ভালো ফলনশীল এবং উন্নত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।

    বাংলাদেশে  বোরো মৌসুম চাষকৃত উচ্চ ফলনশীল ও জনপ্রিয় কিছু ধানের জাত হলো: ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৬৭, ব্রি ধান৮৪, ব্রি ধান৮৮ ব্রি ধান৮৯ ইত্যাদি। এছাড়া হাইব্রিড ধান ইস্পাহানি ৭, ইস্পাহানি ৮ এবং SLH-8 এর মতো জাতগুলোও বোরো মৌসুমে চাষ করা হয়।

    বাংলাদেশে আউস মৌসুমে চাষ করা জনপ্রিয় ধানের জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বিআর২৬, ব্রি ধান৪৮, ব্রি ধান৮৩, ব্রি ধান৯৮ ।

    বাংলাদেশে আমন মৌসুমে চাষের জন্য জনপ্রিয় ধানের জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাত যেমন বিনা ৭,বিআর১১,বিআর২২, ব্রি ধান ৩৯, ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান৫২,ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৯৪, ব্রি ধান ১০৩। এছাড়াও, বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য বিআর২৩ এবং বিশেষ সুগন্ধযুক্ত চালের জন্য নাম দুলাভোগ (BR-5) সহ আরও অনেক স্থানীয় ও প্রচলিত জাত (যেমন নাজিরশাইল, কাটারিভোগ এবং রূপশাইল) বেশ জনপ্রিয়।

     আদর্শ বীজতলা তৈরী :দো-আশ ও এটেল মাটি বীজতলার জন্য ভাল। জমি অনুর্বর হলে প্রতি বর্গমিটারে ২ কেজি হারে জৈব সার মেশানো যেতে পারে। এরপর জমিতে ৫-৬ সেঃমিঃ পানি দিয়ে ২/৩টি চাষ ও মই দিয়ে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে। আগাছা ও খড় ইত্যাদি পচে গেলে আবার চাষ ও মই দিয়ে কাদা করে জমি তৈরী করতে হবে। এবার জমির দৈর্ঘ বরাবর ১মিঃ চওড়া বেড তৈরী করতে হবে। দু’বেডের মাঝে ২৫-৩০ সেঃমিঃ জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে। নির্ধারিত জমির দু’পাশের মাটি দিয়ে বেড তৈরী করতে হবে। এরপর উপরের মাটি ভালভাবে সমান করে ৩/৪ ঘন্টা পর বীজ বোনা উচিত।

    বীজতলায় পরিচর্যা

    বীজতলায় সব সময় নালা ভর্তি পানি রাখা উচিত। বীজ গজানোর ৪-৫ দিন পর বেডের উপর ২-৩ সেঃমিঃ পানি রাখলে আগাছা ও পাখির আক্রমন নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    জমি তৈরীর উত্তম পদ্বতি

    মাটির প্রকারভেদে ৩-৫ বার চাষ ও মই দিলেই জমি তৈরী হয়ে মাটি থকথকে কাদাময় হয়। জমি উঁচুঁনিচু থাকলে মই ও কোদাল দিয়ে সমান করে নিতে হবে।

    ধানের চারা রোপনের উত্তম পদ্বতি কি ও চারার বয়স কত হলে ভাল হয়

    আউশে ২০-২৫ দিনের, রোপা আমনে ২৫-৩০ দিনের এবং বোরোতে ৩৫-৪৫ দিনের চারা রোপন করা উচিত। এক হেক্টর জমিতে ৮-১০ কেজি বীজের চারা লাগে। প্রতি গুছিতে ১টি সতেজ চারা রোপন করাই যথেষ্ট। তবে চারার বয়স একটু বেশি হলে প্রতি গুছিতে ২-৩টি চারা রোপন করা যেতে পারে। সারিতে চারা রোপন করার সময় সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ২০-২৫ সে.মি. এবং প্রতি গুছির দূরত্ব ১৫-২০ সে.মি. হওয়াই উত্তম।

    ধান চাষে সার প্রয়োগের নিয়মাবলী

    ধান গাছের বাড়-বাড়তির বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন মাত্রায় নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। প্রথম দিকের কুশি গজানোর সময় ইউরিয়া সার প্রয়োগ করলে তা থেকে গাছ প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন গ্রহণ করে কার্যকরী কুশির সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। সর্বোচ্চ কুশি উৎপাদন থেকে কাইচথোর আসা অবধি গাছ প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন পেলে প্রতি ছড়ায় পুষ্ট ধানের সংখ্যা বাড়ে। ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার যেমন টিএসপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক সালফেট মাত্রানুযায়ী জমি তৈরীর শেষ পর্যায়ে ছিটিয়ে প্রয়োগ করে চাষ দিয়ে মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে। তবে বেলে মাটিতে পটাশ সার দু’কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। তিন ভাগের দুই ভাগ জমি তৈরীর শেষ চাষের সময় এবং এক-তৃতীয়াংশ কাইচথোড় আসার ৫-৭ দিন আগে প্রয়োগ করতে হবে। জৈব সার ব্যবহার করা সম্ভব হলে তা প্রথম চাষের সময়ই জমিতে সমভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। জৈব সার খরিফ মৌসুমে ব্যবহার করাই শ্রেয়।

    ইউরিয়া সার প্রয়োগ করার পরও ধান গাছ যদি হলদে থাকে এবং বাড়-বাড়তি কম হয় তাহলে গন্ধকের অভাব হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়। সেক্ষেত্রে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ হিসাবে জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে। অত:পর বিঘা প্রতি ৮ কেজি জিপসাম সার উপরিপ্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

    আগাছা দমন

    আগাছা ফসলের একটি মারাত্মক শত্রু। আগাছা ফসলের ক্ষেতে অনাকাঙ্কিত উদ্ভিদ যেমন শ্যামা, চেঁচড়া, হলদে মুথা ইত্যাদি। যে উদ্ভিদ ভুল জায়গায় জন্মেছে যেমন ধান ক্ষেতে পাট গাছ। আগাছা ধান গাছের আলো, পানি ও খাদ্য উপাদানের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় এবং ফসলের ক্ষতি করে।

    আগাছা দমনের পদ্বতিগুলো হলো

    (ক)হাত বাছাই, (খ)রাইচ উইডার ও (গ)আগাছানাশক-এর যে কোন পদ্বতি ব্যবহার করে আগাছা দমন করা যায়। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মীদের সাথে পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিতে হবে।

     ধান চাষে সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা

    ধান চাষে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ধানের জমিতে সব সময় দাঁড়ানো পানি রাখার প্রয়োজন নেই। ধানের চারা রোপনের পর জমিতে ১০-১২ দিন পর্যন্ত ছিপছিপে পানি রাখতে হবে যাতে রোপণকৃত চারায় সহজে নতুন শিকড় গজাতে পারে। এরপর কম পানি রাখলেও চলবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, ধানগাছ যেন খরা কবলিত না হয়। বৃষ্টি-নির্ভর রোপা আমন এলাকায় জমির আইল ১৫ সে.মি. উঁচু রাখলে অনেকাংশে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যায় যা খরা থেকে ফসলকে কিছুটা হলেও রক্ষা করে। এরপরও যদি ধান ফসল খরা কবলিত হয় তাহলে প্রয়োজন মাফিক সম্পূরক সেচ দিতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, খরা কবলিত ধানের চেয়ে সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায় ১ টন বেশি হয়।

    ধানের কীটপতঙ্গ ও রোগ নিয়ন্ত্রণ

    মাজরা পোকা:

    মাজরা পোকার আক্রমণ ফুল ফোঁটার আগে হলে মরা ডিগ এবং ফুল ফোঁটার পরে হলে সাদা শিষ বের হয়।

    ব্যবস্থাপনার জন্য করণীয়ঃ

    • ডিমের গাদা সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলুন।
    • আলোক-ফাঁদের সাহায্যে পোকা (মথ) সংগ্রহ করে দমন করুন।
    • ধান ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে পোকাখেকো পাখির সাহায্য নিন।
    • পরজীবী (বন্ধু) পোকা মাজরা পোকার ডিম নষ্ট করে ফেলে। সুতরাং যথাসম্ভব কীটনাশক প্রয়োগ বিলম্বিত করুন।
    • জমিতে যদি ১০% মরা ডিগ অথবা প্রতি স্কয়ার মিটারে ২-৩টি স্ত্রী মথ দেখা যায়

    তাহলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন-ইনসিপিয়ো ২০ এসসি(আইসোসাইক্লোসিরাম ২০ ডাব্লিউ/ভি)/ বেল্ট এক্সপার্ট ৪৮ এসসি (ফ্লুবেনডিয়ামাইড+থায়াক্লোপ্রিড) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৫ মিলি কীটনাশক মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে ১০-১৪ দিন পর দ্বিতীযবার জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

    বাদামী গাছ ফড়িং:

    বাদামি গাছ ফড়িং(কারেন্ট পোকা) ধানগাছের গোড়ায় বসে রস শুষে খায়। ফলে গাছ পুড়ে যাওয়ার রং ধারণ করে মরে যায় তখন একে বলা হয় “হপার বার্ন বা “ফড়িং পোড়া”।

    ব্যবস্থাপনার জন্য করণীয়ঃ

    • পরিমিত ইউরিয়া সার ব্যবহার করুন।
    • ধান গাছের গোড়ায় পোকা দেখা গেলে ক্ষেতে জমে থাকা পানি সরিয়ে জমি কয়েকদিন শুকিয়ে নিন।
    • স্বল্প জীবনকালের ধানের জাত চাষ করলে এ পোকার আক্রমণ এড়ানো যায়।

    নিয়মিত জমিতে ধান গাছের গোড়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বাদামী গাছ ফড়িং এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলে জমি থেকে দাঁড়ানো পানি কয়েকদিনের জন্য বের করে দিতে হবে। প্রতি হিলে ২-৩টি স্ত্রী পোকা অথবা ১০টি নিম্ফ দেখা গেলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন-ভেসটোরিয়া ২০ ডব্লিউজি অথবা ফুল স্টপ ৮০ ডব্লিউডিজি অথবা পাইরাজিন ৭০ ডব্লিউডিজি (পাইমেট্রোজিন ৬০% + নাইটেনপাইরাম ২০%) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৪-৫ গ্রাম ওষুধ মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।

    ব্লাস্ট (Blast):

    ব্লাস্ট ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগ পাতায় হলে পাতা ব্লাস্ট, গিটে হলে গিট ব্লাস্ট ও শিষে হলে শিষ ব্লাস্ট বলা হয়। পাতায় ব্লাস্ট হলে পাতায় ছোট ছোট ডিম্বাকৃতির দাগের সৃষ্টি হয়। আস্তে আস্তে দাগ বড় হয়ে দু’প্রান্ত লম্বা হয়ে চোখের আকৃতি ধারন করে। দাগের চার ধারে বাদামি ও মাঝের অংশ সাদা বা ছাই বর্ণ ধারন করে। অনেকগুলো দাগ একত্রে মিশে গিয়ে পুরো পাতা মরে যায়। এ রোগের কারণে জমির সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ রোগ বোরো মৌসুমে বেশি হয়। গিট ব্লাষ্ট এবং শিষ ব্লাষ্ট হলে গিট ও শিষের গোড়া কালো হয়ে যায় ও ভেঙ্গে পড়ে এবং ধান চিটা হয়ে যায়। রাতে ঠান্ডা, দিনে গরম, রাতে শিশির পড়া এবং সকালে কুয়াশা থাকলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

    ধানে পাতাব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে রোগ দেখা দেওয়ার পর বিকাল বেলা ট্রুপার (৮ গ্রাম/১০লি পানি) অথবা নেটিভো (৬ গ্রাম/১০লি পানি) ৫ শতাংশ জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

     খোলপোড়া (Sheath blight): খোলপোড়া ছত্রাকজনিত রোগ। ধান গাছের কুশি গজানোর সময় হতে রোগটি দেখা যায়। প্রথমে খোলে ধূসর জলছাপের মত দাগ পড়ে। দাগের মাঝখানে ধূসর হয় এবং কিনারা বাদামি রঙের রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। দাগ আস্তে আস্তে বড় হয়ে সমস্ত খোলে ও পাতায় অনকেটা গোখরো সাপের চামড়ার মত চক্কর দেখা যায়। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া, বেশি মাত্রায় ইউরিয়ার ব্যবহার ও ঘন করে চারা রোপন এ রোগ বিস্তারে সহায়তা করে।

    খোলপোড়া রোগ সীমিত মাত্রায় হলে ছত্রাক নাশক প্রযোগের প্রয়োজন নেই। জমি শুকিয়ে দিয়ে বিঘা প্রতি ৫কেজি অতিরিক্ত পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। রোগের মাত্রা যদি বেশি হয় তাহলে এমিস্টার টপ/ফলিকুর/টিল্ট অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

     পাতা মোড়ানো পোকা: জমিতে পাতা মোড়ানো পোকা দ্বারা ২৫% পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন- সাকসেস ২.৫ এসসি (স্পিনোসাড) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১৫ মিলি কীটনাশক মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।

    লক্ষীর গু (False smut): এটিও ছত্রাকজনিত রোগ। ধান পাকার সময় এ রোগ দেখা যায়। ছত্রাক ধানের বাড়ন্ত চালকে নষ্ট করে বড় গুটিকার সৃষ্টি করে। গুটিকার ভিতরের অংশ হলদে-কমলা রঙ এবং বহিরাবরণ সবুজ যা আস্তে আস্তে কালো হয়ে যায়।

    ব্যবস্থাপনার জন্য করণীয়ঃ এ রোগ ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে ভাল উপায় হল রোগাক্রান্ত শিষ তুলে ফেলা ও মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার না করা।

    ধান ফসল কাটা, মাড়াই ও সংরক্ষণ:অধিক পাকা অবস্থায় ফসল কাটলে অনেক ধান ঝরে পড়ে, শিষ ভেঙ্গে যায়, শিষকাটা লেদাপোকা এবং পাখির অক্রমণ হতে পারে। শিষের শতকরা ৮০ ভাগ ধানের চাল শক্ত ও স্বচ্ছ হলে ধান ঠিকমতো পেকেছে বলে বিবেচিত হবে। কাটার পর ধান মাঠে ফেলে না রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাড়াই করা উচিত। কাঁচা খলার উপর ধান মাড়াই করার সময় চাটাই, চট বা পলিথিন বিছিয়ে নিন। এভাবে ধান মাড়াই করলে ধানের রঙ উজ্জ্বল ও পরিষ্কার থাকে। মাড়াই করা ধান অন্তত ৪-৫ দিন রোদে ভালভাবে শুকানোর পর যেন বীজের আর্দ্রতা শতকরা ১২ ভাগের নিচে থাকে এবং এমতাবস্থায় গুদামজাত ও আর্দ্রতা-রোধক গুদামে সংরক্ষণ করতে হবে।

    লেখিকা-আরজু আক্তার

    উপজেলা কৃষি অফিসার,গলাচিপা পটুয়াখালী।

    বিআলো/এফএইচএস

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    October 2025
    M T W T F S S
     12345
    6789101112
    13141516171819
    20212223242526
    2728293031