ঈদ বাজার নিয়ে হতাশ বিক্রেতারা, আতঙ্কে বের হচ্ছেন না অনেকেই

ঈদ বাজার নিয়ে হতাশ বিক্রেতারা,  আতঙ্কে বের হচ্ছেন না অনেকেই

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: বর্তমান ঈদবাজারের অবস্থা করোনা পরিস্থিতিতির কারণে অন্য সব বারের মতো নয়। সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা বলা হলেও জমেনি ঈদ বাজার। অধিকাংশ দোকানপাট-শপিংমলই বন্ধ। তবে যে কয়টি দোকান খুলেছে তাতেও নেই আমেজ। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর কিছুটা ভিন্নভাবেই দিনটি উদযাপন করতে হবে দেশবাসীকে। তাই বেচাবিক্রি না থাকায় হতাশ বিক্রেতারা। 

অতীতে ঈদের দিন যতো এগিয়ে আসতো ততই নগরীর মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়তো। এ বছর সেই চিত্র দেখা যায়নি। করোনা আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকেই। তবে যারা কেনাকাটার জন্য বের হচ্ছেন তাদের মধ্যেও যথেষ্ট সাবধানতা দেখা যাচ্ছে। কেনাকাটা করলেও বেশি সময় ব্যয় করছেন না তারা। আর মার্কেটগুলোতেও রয়েছে কিছুটা সাবধানতা ও সচেতনতা।

রবিবার (১৭ মে)  বিকেলে নিউমার্কেট সংলগ্ন এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে মার্কেটটি বন্ধ থাকলেও তার আশপাশের ফুটপাতগুলোতে কিছু দোকানপাট বসেছে। তবে তাতে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। ডাকাডাকি করেও তেমন একটা ক্রেতা পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। তাদের আশা ঈদের দিন ঘনিয়ে আসলে ক্রেতা সাধারণের ভিড় কিছুটা বাড়বে। 

বিকেলে গাউছিয়া ও চাঁদনি চক মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ঈদের পোশাকের অন্যতম এ মার্কেটটি বন্ধ রয়েছে। আশপাশে বেশ কয়েকটি ছোটখাটো দোকানপাট খুলেছে। এসব দোকানপাটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন গত কয়েক দিনের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তেমন বেচাবিক্রি হচ্ছে না। আগামী দুই-একদিন ক্রেতাদের সংখ্যা আরও কিছুটা বাড়বে।

জানতে চাইলে রিয়া ফ্যাশন হাউজের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এখনও তেমন একটা বেচা-বিক্রি নেই। আমাদের দোকানের ক্রেতাদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে নি¤œ ও নি¤œমধ্যবিত্ত পরিবার। কিন্তু এখন তাদের অবস্থা তেমন একটা ভালো না। তারা মার্কেট করতে কম আসছেন। সারা দিনে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকারও বেচাকেনা হচ্ছে না।

তার দোকানের সামনেই ভ্যান সার্ভিসে করে বাচ্চাদের জামাকাপড় বিক্রি করছেন সামসুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুপুরের পর দোকান বসিয়েছি। এখন পর্যন্ত ২টি পাঞ্জাবি আর বাচ্চাদের কয়েকটি জামা বিক্রি করেছি। সব মিলিয়ে হাজার ১২শ’ টাকারও বিক্রি হয়নি।

ঢাকার এলিফেন্ট রোড এলাকার পুরো মার্কেট না খুললেও কোথাও কোথাও ঈদের পোশাক কেন্দ্রিক কিছু মার্কেটের নিচ তলার দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। তবে এইসব দোকানে যারা আসছেন তারা তেমন সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্কও পরেননি অনেকেই।

আড়ংসহ যেসব বড় বড় শপিংমল খোলা রয়েছে সেসব মার্কেটে গ্রাহকদের উপস্থিতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করানোর দাবি করলেও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে নজরুল ইসলমা নামে এক ক্রেতা জানান, স্বাস্থ্যবিধি সবারই মানা উচিত। কিন্তু আমি একা মানতে চাইলে কী হবে। অন্যরাতো মানছেন না। দোকানপাটগুলোর অবস্থাও তো খারাপ। এর মধ্যেও তো কেনাকাটা করতে হবে। বছরে দুটি ঈদ আসে। তাতে যদি ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু কেনা না হয়, তাহলে তো ঈদটা পরিপূর্ণ হয় না।