কাতারে কোয়ারেন্টাইনে দেড় হাজার বাংলাদেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক: কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যেও বেশ কিছু দেশে গত শুক্রবার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এই অঞ্চলের প্রবীণ ও মধ্যবয়সীরা বলছেন, স্মরণকালে যুদ্ধাবস্থায়ও এই অঞ্চলে তারা এমন নিস্তব্ধ সময় পার করেননি। কাতার কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা ২০১৭ সালে প্রতিবেশী দেশগুলোর আকস্মিক চাপিয়ে দেওয়া অবরোধের দুঃসময় মোকাবিলা করতে পেরেছি, বর্তমানের এই সাময়িক দুর্যোগও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাটিয়ে উঠব।
এই অঞ্চলে ইরানের পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কাতার। ২০ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এদিন নতুন করে আরো ১০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭০। এ পর্যন্ত কাতারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছে ১০ জন। আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ হাজারের বেশি মানুষের।
কাতারের শিল্পাঞ্চল সানাইয়ার কথা এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ১৭ মার্চ থেকে সানাইয়ার পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ প্রান্ত জুড়ে প্রতিটি প্রবেশ ও বহির্গমন পথে পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। দুই সপ্তাহের জন্য এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় সংবাদমাধ্যমে। ফলে সানাইয়া এখন দেশের অন্যান্য অংশ থেকে এখন এক রকম বিচ্ছিন্ন। কাতারের এই বিচ্ছিন্ন নগরীতে বাংলাদেশিসহ বিপুলসংখ্যক শ্রমিক বসবাস করেন। তাদের বেশ কয়েকজন জানান, সরকারিভাবে সেখানে চাল, ডাল, তেলসহ প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। যেসব শ্রমিক এ অবস্থায় কাজে যেতে পারছেন না, মাস শেষে তারা সবাই পুরো মাসের বেতন পাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ৭ মার্চ থেকে কোয়ারেন্টাইনে থাকা একজন বাংলাদেশি কর্মী বলেন, ‘সবজি মার্কেট এলাকা থেকে আমিসহ ৩০-৪০ জন বাংলাদেশিকে চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। আমাদের মধ্যে একজনের তাপমাত্রা বেশি থাকায় সতর্কতামূলক আমাদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।’
কোয়ারেন্টাইনে থাকা আরেকজন কর্মী বলেন, আমাদের জন্য প্রতিদিন তিন বেলা ভালো মানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তোয়ালে, প্যান্ট, টুথপেস্টসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন দুই দফা তাপমাত্রা চেক করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রতিরুমে একজন করে দুই তলায় মোট আটজন থাকেন এক ভবনে। এমন অনেকগুলো ভবনে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি কর্মী আছেন।
মন্তব্য করুন