কিশমিশের দুই রূপ: কোনটি খাবেন, কোনটি এড়িয়ে চলবেন
বিআলো ডেস্ক: স্বাস্থ্যসচেতনদের খাদ্যতালিকায় কিশমিশের জনপ্রিয়তা বহুদিনের। পোলাও, পায়েসে ব্যবহারের বাইরে সাম্প্রতিক সময়ে খালি পেটে কিশমিশ খাওয়া কিংবা কিশমিশ ভেজানো পানি পান করাও বেশ প্রচলিত হয়েছে। তবে বাজারে পাওয়া সোনালি ও কালো দুটি কিশমিশই পুষ্টিগুণে সমান নয়। কোনটি দৈনন্দিন খাবারে রাখবেন, আর কোনটি এড়িয়ে চলবেন- সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুম্বাইয়ের পুষ্টিবিদ শ্বেতা জে পঞ্চাল।
রাসায়নিক-মুক্ত হওয়ায় এগিয়ে কালো কিশমিশ-
পুষ্টিবিদের তথ্যমতে, কালো কিশমিশ রোদে স্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে তৈরি হয় এবং এতে কোনো ধরনের রাসায়নিক বা প্রিজারভেটিভ মেশানো হয় না। ফলে এটি শরীরের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ।
কালো কিশমিশে রয়েছে আয়রন ও ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, যা শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কার্যকর। বিশেষত পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমে ভোগা নারী, প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং রক্তাল্পতায় ভোগাদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী বলে জানান পুষ্টিবিদ।
এ ছাড়া এতে থাকা পলিফেনল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের প্রদাহ কমায়। প্রি-বায়োটিক ফাইবার অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার পুষ্টি বাড়িয়ে হজমশক্তি উন্নত করে। নিয়মিত কালো কিশমিশ গ্রহণ ত্বক ও চুলের জন্যও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
সোনালি কিশমিশে লুকানো ঝুঁকি-
অন্যদিকে বাজারে প্রচলিত সোনালি কিশমিশের উজ্জ্বল রং প্রাকৃতিক নয়। ভালো রং ধরে রাখা এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষণে সক্ষম করতে এতে সালফার ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। পুষ্টিবিদ শ্বেতা জে পঞ্চালের মতে, এই রাসায়নিক উপাদান হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং বিশেষত অ্যাজমা, পেটের জটিলতা বা আইবিএস-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য তা ঝুঁকিপূর্ণ।
সোনালি কিশমিশ শক্তি ও পটাশিয়ামের উৎস হলেও নিয়মিত সেবনে অন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি লিভারের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে। হরমোনজনিত সমস্যা বাড়ার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
কোনটি বেছে নেবেন?
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, রং বা আকারের চেয়ে গুরুত্ব পাওয়া উচিত খাদ্যের নিরাপত্তা ও পুষ্টিগুণে। সে বিবেচনায় দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় কালো কিশমিশই বেশি উপকারী। সোনালি কিশমিশ রান্নায় ব্যবহার করা গেলেও নিয়মিত সেবনে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদ।
বিআলো/শিলি



