• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    কোরবানির পশুর সংকট নেই দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা 

     dailybangla 
    16th May 2025 9:24 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    * পশু আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই
    * বিপুল সংখ্যক পশু বিক্রির জন্য মজুত
    * সিন্ডিকেট ঠেকাতে প্রশাসনের নজরদারি
    * পশু আমদানি না করলে কৃষকরা লাভবান হবেন
    রতন বালো: প্রতি বছরই কোরবানির আগে গবাদি পশুর সংগ্রহ নিয়ে এক ধরনের চাপা উত্তেজনা চলতে থাকে। খামারিরা চাহিদা মাফিক পশু সরবরাহে সক্ষমতা দেখালেও বিদেশ নির্ভরতা আটকে রাখা যায় না। তবে এই আমদানিকৃত পশু কোনো সময়ই বৈধ পথে আসে না।
    বিভিন্ন অবৈধপথ ব্যবহার করে দেশের বাজারে এই পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য হাটে তোলা হয়। অবৈধ পথে আসা এসব কোরবানির পশুর বেশিরভাগের যোগানদাতা ভারত। তবে মিয়ানমার থেকেও কোরবানি উপলক্ষে কিছু পশু দেশের বাজারে ঢোকে। তবে পর্যাপ্ত পশু থাকলেও ঊর্ধ্বগতির গো-খাদ্যের বাজার মূল্যে পশুর প্রকৃত দাম তোলা নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা।
    মানিকগঞ্জের মো. রমজান মিয়া নামে এক খামারির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে এক বস্তা গমের ভুসি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকায়। কয়েক মাস আগে ছিল ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা। একইভাবে মাষকলাইয়ের ভুসির বস্তা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৪৫০ টাকা।
    মো. বাদল নামে অপর খামারি জানান, দুই থেকে তিন মাস আগেও গমের ভুসির দাম ছিল এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এক বস্তা খৈল বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা। যা কয়েকমাস আগে দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হতো। দাম বেড়েছে শুকনো খড়ের। বর্তমানে এক মণ খড় বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।
    এ কারণে আসন্ন ঈদে গবাদি পশুর সঠিক মূল্য পাবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন খামারিরা। লাল মিয়া নামে অপর এক খামারি বলছেন, বিদেশ থেকে পশু আমদানি করলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ক্ষুদ্র খামারিরা একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা আর গবাদি পশু পালন নাও করতে পারেন। তাই চোরাইপথে বা পশু আমদানি না করলে ক্ষুদ্র কৃষকরা লাভবান হবেন।
    এদিকে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেনের মতে, এ বছর দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ। এছাড়া এক কোটি ১০ লাখের মতো পশু কোরবানি করা হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
    অপরদিকে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বিপুল সংখ্যক পশু বিক্রির জন্য মজুত আছে। এ কারণে পশু আমদানির প্রয়োজন নেই। পশু খামারিদের দেওয়া পরিসংখ্যান মতে, আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য সারাদেশে খামারিদের কাছে ১ কোটি ২৪ লাখের বেশি গবাদি পশু রয়েছে। খামারিরা শেষ মুহূর্তে গবাদি পশুগুলো হাটে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
    এদিকে কোরবানির ঈদের বাজারে দুষ্ট চক্র যাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে প্রশাসন তাদের নজরদারি বাড়িয়েছে। পথে পথে পশুবোঝাই ট্রাক আটকে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তার জন্য আগাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
    প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের তথ্য থেকে জানা গেছে, সারা দেশে ছোট বড়মিলে ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩৬টি গবাদি পশুর খামার রয়েছে। এই সব খামারে কোরবানির যোগ্য ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি গবাদি পশুর মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ লাখ দুই হাজার ৯০৫টি গরু ও মহিষ কোরবানিযোগ্য। রয়েছে ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল ও ভেড়া। এছাড়াও ৫ হাজার ১২টি অন্যান্য প্রজাতির কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। দেশের বাজারে কোরবানিতে উট ও দুম্বাও ওঠে।
    গত ৪ মে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়ছেন, দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি গবাদি পশু থাকায় চলতি বছর কোরবানির ঈদের জন্য পশু আমদানির প্রয়োজন নেই। দেশীয় খামারিদের স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রেখে সরকার এই অপশু আমদানি থেকে পিছিয়ে এসেছে।
    রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে আওতায় এবার যে ১৯টি পশুর হাট বসছে সেখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া পশু বা রোগে আক্রান্ত পশুদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিতে ২০টির বেশি পশু ডাক্তারের ( ভেটেরিনারি) মেডিক্যাল টিম ও দুইটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম ঈদের সময় কাজ করবে।
    এদিকে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (অপারেশন) শফিকুল ইসলাম গত ৬ মে মঙ্গলবার জানান, কোরবানির ঈদের সময় মহাসড়কে চলাচলকারী পশু বোঝাই ট্রাক রাস্তায় থামানো যাবে না। এ জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যে হাটের জন্য পশু বোঝাই ট্রাক যাবে কেবলমাত্র সেই হাটেই থামবে।
    এ ক্ষেত্রে ট্রাকের সামনে ব্যানারে হাটের নাম লেখে রাখতে হবে। আর এসব ট্রাকের নিরাপত্তা দিতে মহাসড়কের পথে পথে বিভিন্ন পয়েণ্টে খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ভাবে হাইওয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে। মহাসড়কে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা না হয়। তার জন্য মহাসড়কের কাছে কোন হাট বসানো যাবে না।
    এসব কার্যকর করতে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতিও নেয়া হয়ে হয়েছে। পশু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য হাইওয়ে পুলিশের লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। যেখানে প্রতিটি থানা ও কন্ট্রোল রুমে ফোন নম্বর দেয়া থাকবে। মহাসড়কের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে এখন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
    এদিকে গ্রাম-গঞ্জে খবর নিয়ে জানা গেছে, জেলা, পৌরসভায় ও গ্রামে আগে দলীয় এমপি, মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের নেতারা একাধিক পশু কোরবানি দিত। এইবার এখনও সেই রকম পরিস্থিতি নেই। অনেকেই নানা অনিয়মে আত্মগোপনে আছে। আবার কেউ মামলার আসামি হয়ে পলাতক আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সংখ্যাও কম নয়। আবার অনেকেই দুর্নীতির মামলায় কারাগারে আছে।
    এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, কোরবানির সময় সবাই যাতে রোগমুক্ত পশু কোরবানি দিতে পারে তার জন্য শহর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত ভ্যাটেরিনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। কোরবানির সময় পশু ডাক্তাররা কাজ করবেন। এ নিয়ে এ বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রোগাক্রান্ত পশু যাতে কোরবানি দিতে না হয় তা নিয়ে আমাদের প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা এখন কাজ করে যাচ্ছেন। কোরবানির হাটেও পশু চিকিৎসার মেডিক্যাল টিম থাকবে বলে তিনি জানান।

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930