গফরগাঁওয়ে দুগ্ধ খামারে স্কুল শিক্ষক পলাশের সাফল্য

গফরগাঁওয়ে দুগ্ধ খামারে স্কুল শিক্ষক পলাশের সাফল্য

মো. লিয়াকত আলী, গফরগাঁও প্রতিনিধি: গোলাম মঞ্জুরুল কবীর পলাশ শিক্ষকতার পাশাপাশি বাড়তি কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে হঠাৎ একদিন ১০টি ষাড় গরু কিনে আনেন বাড়িতে। সেই থেকেই শুরু। নিজের পরিশ্রম সম্বল করে সে পথে বহুদূর এগিয়েছেন তিনি। গবাদিপশুর (দুগ্ধ) খামার করে পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা। এলাকায় সফল খামারি হিসেবে পরিচিতিও পেয়েছেন উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের বাঘেরগাঁও গ্রামের এই বাসিন্দা।

২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ১০টি ষাড় গরু কিনে গবাদিপশুর খামার গড়ে তোলেন। পরে ওই খামারের জন্য একটি গাভি ক্রয় করে আনেন। একটি থেকে দুটি গাভি। দুটি থেকে ছয়টি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ছয়টি থেকে ধীরে ধীওে ২০টি বিভিন্ন আকারের গাভি রয়েছে শিক্ষক গোলাম মঞ্জুরুল কবীর পলাশের খামারে। গত তিন বছরে শিক্ষক পলাশ হয়ে উঠলেন একজন সফল খামারি।

এসব গাভি থেকে গড়ে ১৪৫ থেকে ১৫০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় দুধ। দুগ্ধ গাভির খাবার বাবদ দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার টাকার মতো খরচ হয়। দুধ দোহানোর পর তা উপজেলা সদরের বিভিন্ন হোটেলে বিক্রি করেন। প্রতিদিন অন্তত ৭ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করতে পারেন বলে জানান খামারী পলাশ।

সফল এ খামারির বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাঘেরগাঁও গ্রামে। তিনি পাঁচবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

তিনি পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে শুধু নিজে সফল হয়ে থেমে থাকেননি, পাশাপাশি গ্রামের অন্যদেরও গাভি পালনে উৎসাহিত করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখিয়েছেন। তার দেখাদেখি খামার-বিপ্লব ছড়িয়ে পড়েছে গফরগাঁও উপজেলার আশপাশের গ্রামগুলোয়। তবে তিনি প্রথমে ক্রয় করা ১০ ষাড়ের সবকটিই বিক্রি করে দিয়েছেন। 

এখন তিনি পুরোদমে দুগ্ধ খামারী। ওই খামারের নাম ‘বাদার্স ক্যাটেল ফার্ম’। গফরগাঁও পৌর শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে বাঘেরগাঁও গ্রাম। এ গ্রামের বাড়ির পাশেই বিশাল সেড ঘরে খামার।

পলাশ জানান, দুধেল গাভির মধ্যে ২০টিই ফ্রিজিয়ান জাতের। ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি ৩০ থেকে ৩৫ লিটার পর্যন্ত দুধ দেয়। দুগ্ধ খামারে কোনো এঁড়ে বাছুর রাখেন না তিনি। দুধ দেওয়া শেষ হলেই তা বিক্রি করে দেন। যে গাভি দিয়ে খামার শুরু করেছিলেন, সেটিও রয়েছে খামারে।

পলাশের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই দুগ্ধ খামার করেছেন। প্রায় প্রতিদিনই লোকজন আসেন পলাশের কাছে খামার সম্পর্কে নানা পরামর্শ নিতে। 

গফরগাঁও উপজেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয়ের ভ্যাটেনারি সার্জন ডাঃ আরিফুল ইসলাম জানান, শিক্ষক পলাশের খামার গড়ে তোলার মাধ্যমে এলাকার দুধের চাহিদা পূরণ করছেন। তিনি নিজের ভাগ্যবদলের পাশাপাশি অন্যদের খামার গড়ার পরামর্শ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছেন।  

বিআলো/শিলি