• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    চুয়াডাঙ্গায় সাড়ে তিনশ’ বছরের মাজার ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা 

     dailybangla 
    15th Oct 2024 11:17 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামে মাথাভাঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে প্রায় সাড়ে ৩শ বছরের অধিক সময় আগে অবস্থিত রেজা শাহ্ চিশতি (শাহ্ ভালাই) এর মাজার ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা।

    সাড়ে ৩শ বছর আগে ইসলাম ধর্ম প্রচারের এসে তিনি এখানে মৃত্যুবরণ করেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে গত ৫ ও ৬ আগস্ট এই মাজারের সকল স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সবকিছু লুটপাট করে আত্মসাৎ করছে দুর্বৃত্তরা।

    জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামের মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে রয়েছে ঈদগা, গ্রামের কবরস্থান ও একপাশে নদীর কোলঘেঁষে রেজা শাহ্ চিশতি (শাহ্ ভালাই) এর মাজার। ৩৩ শতক জমির উপর শাহ্ ভালাই দরগা হিসাবে পরিচিত এই স্থানকে ঘিরে ভক্তরা তৈরি করেন মাজার। মাজারে ভক্ত সমর্থকদের দানের টাকায় গড়ে তোলা হয় একটি পাকা টাইলস দেওয়া বিশ্রামাগার, রান্নাঘর ও বাথরুম। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার মানুষ মানত করতে আসতেন তাদের মনবাসনা পূরণে। এছাড়াও বাউল ধারার অনুসারীরা এখানে অবস্থান করে সাধন সংগীতের চর্চা করতেন।

    গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে ঐ দিন সন্ধ্যায় ও পরদিন সন্ধ্যায় ২০-২৫ জন স্থানীয় দুবৃত্তরা হামলা চালিয়ে সব কিছু ভাঙচুর করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয় মাজারের পাশের কবরস্থানে ঐ গ্রামের খাজা উদ্দীন নামের এক ব্যক্তির কবরও ভাঙচুর করা হয়।

    গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, রেজা শাহ্ চিশতী ছিলেন একজন ধর্ম প্রচারক। আনুমানিক সাড়ে ৩শ বছর আগে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য তিনি এ এলাকায় এসেছিলেন। তখন এই অঞ্চল ছিলো গহীন জঙ্গল। আস্তে আস্তে বিকশিত শুরু হয়। গড়ে উঠে মানব সমাজ। মাজারে হামলা চালিয়ে ধ্বংসলীলা চালানোর পর থেকে খাদেমদের কেউ ভয়ে-আতঙ্কে মাজারের কাছে আসে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়ে তখন কোন সুরাহা হয়নি। স্থানীয় ২০ থেকে ২৫ জন দুর্বৃত্তরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় মানুষের দাবি এই মাজারে কোন প্রকার মদ, গাঁজা তো দূরের কথা কোন প্রকার সিগারেট, বিড়িও খাওয়া নিষেধ ছিল। কোন রকম মাদকদ্রব্য সেবন করা হতো না। মাজারটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে দৃষ্টি নন্দন করে দিয়েছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদরের একজন ভক্ত। দুর্বৃত্তরা মাজারের প্রধান ফটকের স্টিলের গেটটা লুট করে নিয়ে গেছে। অপর একটি ঘরের দরজা গ্রিল লুট করে তা বিক্রি করে মাজার চতুরে পিকনিক করে খেয়েছে বলে জানান স্থানীয় অনেকেই। ভয়ে গ্রামবাসী এখন আর কারো নাম প্রকাশ করছে না।

    এলাকাবাসী আরও বলেন, যদি কখনো প্রশাসনের লোকজন সরেজমিনে তদন্তে আসে তাহলে তাদের কাছে আমরা এলাকার স্থানীয় দুর্বৃত্তদের নাম প্রকাশ করব এবং মাজার থেকে লুট করা মালামাল কার কার বাড়িতে আছে তাও বলে দেবো। এই মাজারে মানত করার পর মনের আশা পূরণ হলে গত ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার একটি পরিবার আসে মানতের খাসি, ছাগল মাজারে দিতে। কিন্তু এলাকার দুর্বৃত্তরা মানত করতে আসা মানুষদের কাছ থেকে জোর করে খাসি, ছাগলটি ছিনিয়ে নেয়। দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের এক দম্পতির দুইটি কন্যা সন্তানের পরে ৮ বছর আর কোন সন্তান হয়না। মাজারে মানত করে আসার পরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। মনের ক্ষোভ প্রকাশ করে দম্পতি বলেন, আল্লাহর অলি আউলিয়াদের মাজার ভাঙতে নেই। তাতে অভিশাপ বর্ষণ হয়।

    উল্লেখ্য, প্রতি বৃহস্পতিবার এখানে মানতের সিন্নি রান্না করে এলাকার গরীব দুঃখী মানুষের মাঝে বিলি করে খাওয়ানো হতো। মাজার কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মসলেম উদ্দীন বলেন, এখানে কোনো অসামাজিক কার্যকলাপ হতো না। দানের অর্থে মাজারটি গড়ে তোলা হয়েছিল। এই মাজার দামুড়হুদা উপজেলাসহ আশপাশ এলাকার ধর্মীয় ইতিহাস ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মাজার পুনঃনির্মাণ ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    December 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    293031